সন্তু বাহিনীর নৃশংসতার সাক্ষী ৯ সেপ্টেম্বর
দৈনিক খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৬। সেদিন ৩৫ জন কাঠুরিয়াকে নৃশংসভাবে হত্যা করে সন্তু বাহিনী
৯ সেপ্টেম্বর, পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস। ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন শান্তিবাহিনী রাঙ্গামাটি জেলার পাকুয়াখালীতে নিরীহ এবং নিরস্ত্র বাঙালি কাঠুরিয়াদের উপর নির্মম হত্যাকান্ড চালিয়ে তাদের বিভৎস মানসিকতার এক জঘন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। স্বাধীনতার পর পরই জেএসএস তথা শান্তিবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু করে। এই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পার্বত্যাঞ্চলের সহজ-সরল পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোকে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখিয়ে শুরু করে সশস্ত্র তৎপরতা। প্রথম থেকেই তারা নিরাপত্তা বাহিনী এবং নিরীহ বাঙালিদের বিরুদ্ধে চালাতে থাকে একের পর এক আক্রমণ। যে কোন নিরীহ এবং নিরস্ত্র মানুষের উপর সশস্ত্র আক্রমণ করাই যেখানে মানবতা বিরোধী চরম অপরাধ, সেখানে শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরস্ত্র-নিরীহ বাঙালিদের উপর হাজার হাজার সশস্ত্র আক্রমণ পরিচালনা করেছে। কথিত আছে, শান্তিবাহিনী হত্যা করেছে ৩০ হাজারেরও বেশি বাঙালি আবাল-বৃদ্ধ-বনিতাকে। এর মধ্যে কিছু কিছু গণহত্যার ঘটনা আছে যেগুলোকে কোনভাবেই কোনো মানুষের কর্ম বলে বিশ্বাস করা যায় না। বিশেষ করে, ২৯ এপ্রিল ১৯৮৪ খাগড়াছড়ি মাটিরাঙ্গা গণহত্যা, ৩০ মে ১৯৮৪ দিবাগত রাতে সংঘটিত রাঙ্গামাটি জেলার ভূষণছড়া গণহত্যা এবং ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ রাঙ্গামাটির পাকুয়াখালী গণহত্যা অন্যতম।
পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে যারা ওয়াকিবহাল আছেন, তারা পাকুয়াখালী গণহত্যাকে শান্তিবাহিনীর নৃশংসতম গণহত্যা বলে স্বীকার করেন। কেননা, সেদিন শান্তিবাহিনী মিটিং করার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ডেকে নিয়ে ৩৫ জন নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। অবাক করার বিষয় হচ্ছে যে, শান্তিবাহিনী সেদিন এতগুলো মানুষকে হত্যা করতে একটি বুলেটও ব্যবহার করেনি। হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা-দিয়ে কুপিয়ে এবং বন্দুকের বেয়নেট ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নানাভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছিল এই অসহায় মানুষগুলোকে। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সেদিন চরম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল তারা।
পার্বত্যাঞ্চলের নিরীহ অসহায় পাহাড়ি-বাঙালিরা শান্তিবাহিনীকে নিয়মিত চাঁদা দিয়ে পাহাড় থেকে বাঁশ-কাঠসহ অন্যান্য বনজ সম্পদ সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করছিল। রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু উপজেলার সীমান্তবর্তী বাঘাইছড়ির পাকুয়াখালীতেও একই অবস্থা চলছিল। এখানে প্রতিদিন শত শত পাহাড়ি এবং বাঙালি কাঠুরিয়া শান্তিবাহিনীকে চাঁদা দিয়ে বাঁশ এবং গাছ কাটতে যেত পাহাড়ে।
চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য মাঝে-মধ্যে পাহাড়ে শান্তিবাহিনীর সঙ্গে কাঠুরিয়াদের বৈঠক হতো। এক পর্যায়ে ৯ সেপ্টেম্বর ’৯৬ একটি বৈঠক ডাকা হয়। এই বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য কাঠ ব্যবসায়ীদেরও নেয়ার জন্য শান্তিবাহিনীর পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়। শান্তিবাহিনীর কালেক্টর লংগদু থানার মাইনীমুখ বাজারে এসে ব্যবসায়ীদের চিঠির মাধ্যমে বৈঠকে অংশগ্রহণ করার আমন্ত্রণ জানায়। কোনো বৈঠকে ব্যবসায়ীদের এভাবে গুরুত্ব দিয়ে ডাকা হয়নি। ফলে ৯ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে ব্যবসায়ীদের প্রতি অতিরিক্ত গুরুত্ব দেয়ায় ব্যবসায়ীরা বিষয়টি এড়িয়ে যায়। কিন্তু কাঠুরিয়ারা প্রতিদিনের মতো সেইদিন সকাল বেলা স্বাভাবিকভাবেই পাহাড়ে প্রবেশ করতে শুরু করে। তখন শান্তিবাহিনীর পক্ষ থেকে তাদেরকে জানানো হয়, বড়বাবু আজ সবার সঙ্গে মিটিং করবেন। তাই আগে মিটিংয়ে যেতে হবে। এর পর যে যার কাজে যাবে। একথা বলেই এক সাথে চার-পাঁচজন বাঙালি কাঠুরিয়াকে কিছুদূর নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে হত্যা করে। সেদিনকার বাঁধা অবস্থা থেকে পালিয়ে আসা এক মাত্র ব্যক্তি মোহাম্মদ ইউনুছ মিয়া। এই ইউনুছ মিয়ার দেখানো পথ ধরেই পরে ১১ সেপ্টম্বর খুঁজে বের করা হয় ২৮ জনের ক্ষত-বিক্ষত, বিকৃত লাশ। কারো হাত নেই, কারো চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে, কারো কেটে নেয়া হয়েছে কান কিংবা পুরুষাঙ্গ। কাউকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে থেতলে দেয়া হয়েছে মাথা। আবার কাউকে জবাই করা হয়েছে অমানবিকভাবে। অপর ৭ হতভাগ্যের লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমন নির্মম দৃশ্য দেখে সেদিন পার্বত্যাঞ্চলের আকাশ-বাতাস স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। শোকে ভারি হয়ে ওঠেছিল সমস্ত পরিবেশ। পরে উদ্ধার করা লাশগুলি এনে লংগদু উপজেলা মাঠ সংলগ্ন খোলা যায়গায় দাফন করা হয়।
সেদিন নিহত ৩৫ কাঠুরিয়ার স্বজনদের আহাজারী আর উত্তাল পার্বত্য পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখার জন্য তৎকালীন সরকারের ৪ জন প্রভাবশালী মন্ত্রী লংগদু সফর করেছিলেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মদ, পানিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এবং শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী এম. এ. মান্নান। তাঁরা লংগদু গিয়ে মানুষের বুক ফাটা কান্না আর আহাজারী দেখে হত্যকারীদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করার। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সন্তাদের লেখা-পড়ার দায়িত্ব নেয়ার প্রতিশ্রুতিও তারা দিয়েছিলন। তারা লংগদু থেকে ফিরে আসার পর তৎকালীন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সুলতান মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই কমিটি ৩১ অক্টোবর ’৯৬ ইং বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
১ নভেম্বর ১৯৯৬ দৈনিক জনকণ্ঠের এক রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে, উক্ত প্রতিবেদনে শান্তিবাহিনীকেই পাকুয়াখালী ট্রাজেডির জন্য দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে যে, তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার ২৫ বছর পরেও শান্তিবাহিনীর সন্ত্রসাীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর কোনো প্রক্রিয়া শুরু করা হয়নি। পুনর্বাসন করা হয়নি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে। ক্ষতিগ্রস্তদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারেও কোনো দায়িত্ব নেয়া হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে। তাই আজ তারা শিক্ষা-দীক্ষাহীনভাবে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে।
ইতিপূর্বেও শান্তিবাহিনী কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামে আরো বহু গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে৷ যার কোনটিরই বিচার হয়নি। স্বজনহারা মানুষগুলোর সরকারের কাছে একটাই দাবি, যেনো তথাকথিত শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখামুখি করা হয়।
করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]
- আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী
- পাঁচ বছরে সশস্ত্র বাহিনীতে যুক্ত হয়েছে ২৩ ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জাম
- শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন আজ
- বিশ্বের বিস্ময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
- দরিদ্র মানুষের কল্যাণে শেখ হাসিনা আর নৌকার বিকল্প নেই
- খাগড়াছড়িতে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উদযাপন
- নানা আয়োজনে খাগড়াছড়িতে বিশ্ব পর্যটন দিবস পালিত
- খাগড়াছড়িতে বাড়ছে পর্যটক
- ডিজিটাল পেমেন্ট নিরাপদ করতে নতুন নীতিমালা
- সার্কভুক্ত দেশগুলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আমন্ত্রণ জানাবে ইসি
- গণমাধ্যমের বিরুদ্ধেভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকির প্রতিক্রিয়া
- টেকনাফে আরসার দুই শীর্ষ কমান্ডারসহ গ্রেপ্তার ৪
- বিকল্প মুদ্রায় লেনদেন: চাপ কমবে রিজার্ভে
- জ্বালানি তেল
ডিলারদের কমিশন বৃদ্ধি করল সরকার - চা উৎপাদন ছাড়াল ৫৪.৫৮ মিলিয়ন কেজি
- রাজধানীতে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ফেস্টিভাল
- বাংলাদেশে ৪০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে এআইআইবি
- বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী মেক্সিকো
- আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটির সভা আজ
- যেথায় নদী-পাহাড় আর প্রকৃতির মিতালি, সৌন্দর্যে মুগ্ধ পর্যটকরা
- আগামী বছর বাংলাদেশ সফর করবেন সৌদি যুবরাজ
- পরিবেশের ভারসাম্য অক্ষুণ্ন রেখে পর্যটন শিল্প উন্নয়নের আহ্বান
- অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পর্যটন শিল্পের প্রসারে কাজ করছে সরকার
- খাগড়াছড়ি অগ্রণী ব্যাংকের আর্থিক স্বাক্ষরতা কর্মসূচি পালিত
- দীঘিনালায় বঙ্গবন্ধু পল্লীতে জামে মসজিদ উদ্বোধন
- রামগড়ে আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
- বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন ২৮ অক্টোবর
- ১০ অক্টোবর ট্রেন চলবে পদ্মা সেতু দিয়ে
- অক্টোবরে চূড়ান্ত হচ্ছে সমন্বিত ট্রানজিট নীতিমালা
- খাগড়াছড়িতে শুরু হলো তাঁত ও হস্ত শিল্প প্রদর্শনী মেলা
- নেপালে বাংলাদেশিদের জন্য বিনামূল্যে অন-অ্যারাইভাল ভিসার ব্যবস্থা
- নৌকার আদলে পূর্বাচলে হচ্ছে শেখ হাসিনা স্টেডিয়াম
- পানছড়িতে বিজিবির উপর হামলা।। ছিনিয়ে নিল আসামী
- শ্রেয়া ও মিটন চাকমার দায়িত্ব নিলো সেনাবাহিনী
- মিরাজ ‘অবিশ্বাস্য, অসাধারণ, অনবদ্য, অবিস্মরণীয়’
- চাকরি ও বিয়ের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ-পাচার করা হচ্ছে পাহাড়ি তরুণীদের
- পাকুয়াখালী ট্রাজেডি: বেঁচে যাওয়া একমাত্র ব্যাক্তির ভয়াল স্মৃতিকথা
- সব মিশনে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু হবে শীঘ্রই
- কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তার নামে মামলা
- বিচারাধীন বিষয় নিয়ে তৃতীয় পক্ষের এত মাতামাতি কেন?
- সীমানা বাড়ছে রাজউকের, যাচ্ছে পদ্মা ও মেঘনা ব্রিজ পর্যন্ত
- সন্তু বাহিনীর নৃশংসতার সাক্ষী ৯ সেপ্টেম্বর
- সংবিধান অনুযায়ী নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব- শমসের মবিন চৌধুরী
- অপহৃত ঢাবি ছাত্রী দ্বীপিতাকে সাজেক থেকে উদ্ধার
- বিশ্ব গণমাধ্যমে বাইডেন-শেখ হাসিনার ভাইরাল সেলফি
- ম্যাখোঁর ঢাকা সফর: সম্পর্কে নতুন মাত্রা
- স্মার্ট কার্যালয় প্রতিনিধি টিম ঘোষনা করল রামগড় আওয়ামী লীগ
- পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় আসছে সৌদি কোম্পানি
- প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী
- সর্বজনীন পেনশন নিয়ে অপপ্রচার ঠেকানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর