পাহাড়ে যৌথ অভিযান: দেশী-বিদেশী মিডিয়ায় সত্য-মিথ্যার জোড়াতালি!
দৈনিক খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত।
মো. সাইফুল ইসলাম
গত বছরের ৩ অক্টোবর থেকে দেশের দক্ষিন-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে চলছে যৌথবাহিনীর অভিযান। হঠাৎ করেই মাথাচারা দিয়ে উঠা আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট- কেএনএফ ও এর সশস্ত্র শাখা কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি-কেএনএ’র অব্যাহত সন্ত্রাস দমনে চলা এই অভিযানে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজন কেএনএফ সদস্য এবং তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট জঙ্গী সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল্ম হিন্দি শারকিয়ার কয়েকজন জঙ্গী সদস্য যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। বেশ কয়েকজন নিহতও হয়েছেন। উদ্ধার করা হয়েছে বহু অস্ত্র, গোলাবারুদসহ নানা সরঞ্জাম। যৌথবাহিনীর অভিযান চলাকালীন সময়ে নিরাপত্তাবাহিনীর মেডিক্যাল টিমের উপর হামলায় একজন সেনা অফিসার নিহত ও দুজন সেনা সদস্য গুলিবিদ্ধ হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে, কেএনএফ এর গুলিতে নিহত হয়েছেন স্থানীয় এক পাড়া প্রধানও (কার্বারী)। এছাড়া একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্টকে অপহরণের পর প্রায় ১৬ দিন আটকে রেখে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটিয়েছে কেএনএফ। যৌথবাহিনীর অভিযানের মুখে টিকতে না পেরেও প্রায়ই পাহাড়ি গ্রামগুলো নিরীহ গ্রামবাসীদের জিম্মি করে চলছে কেএনএফের নানা ধরনের নির্যাতন। এর হাত বাঁচতে ইতিমধ্যেই বহু গ্রামবাসী নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে রুমা সদরে চলে যান। পরে উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় তাদেরকে মারমা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন কার্যালয়ে আশ্রয় দেয়া হয়। দেয়া হয় পর্যাপ্ত খাবার ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদিও। এর বাইরেও কিছু কিছু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকজন পাড়ার পাশ্ববর্তী সীমান্তে ও সীমান্ত পেরিয়েও অনেকে মিজোরামে আশ্রয় নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। অবশ্য এদের অনেকেই নিয়মিত সীমান্ত পাড়ি দেয়ে নানা কাজে মিজোরামে আসা-যাওয়া করে থাকেন। তবে এ নিয়েও আছে দেশী-বিদেশী স্বার্থান্বেষী মহলের মাথাব্যাথা। চলমান সন্ত্রাস বিরোধী যৌথ অভিযান বন্ধ করতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু মিডিয়া ও একটি বিশেষ মহল এসব নিরীহ জনসাধারণকে নিয়ে এক মনগড়া অভিযোগ সামনে এনেছেন। যা মূলত সত্য-মিথ্যার জোড়াতালি ছাড়া আর কিছুই নয়।
সম্প্রতি পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে যৌথবাহিনীর অভিযানকে ঘিরে দেশব্যাপী নানা আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। একের পর এক জঙ্গী সদস্য ও কেএনএফ সদস্য গ্রেফতার, গোলাগুলি আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিরাপত্তাবাহিনীকে নিয়ে অপপ্রচারের মধ্যেই অভিযানকে ঘিরে নানা প্রশ্ন তুলছে বিভিন্ন দেশী-বিদেশী গণমাধ্যম। অভিযানকালীন সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাহাড়ি গ্রামগুলোতে হামলা চালাচ্ছে, গুলি করছে এবং বোমা ফেলছে। যা স্থানীয় নিরীহ লোকজনের বাড়ির সামনেই বোমা পড়ছে এবং গ্রাম থেকে নিয়মিত নিরীহ লোকজনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, এমন বক্তব্য উদ্ধৃতে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম একটি সংবাদ পরিবেশন করেছে, যার কোন সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায় নি।
বিবিসি বাংলায় পরিবেশিত সেই সংবাদে বান্দরবানের যৌথ অভিযানের ফলে স্থানীয়দের বিপাকে পড়ার সংবাদ তুলে আনতে গিয়ে সুকৌশলে সেনাবাহিনীকে নিয়ে একটি মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সাংবাদিকতার নীতি অনুযায়ী সেই সংবাদে বিবিসি বাংলা কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনীর কোন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের কারও কোন বক্তব্য প্রকাশ করা হয় নি এবং সম্ভবত বক্তব্য নেয়ার প্রয়োজনও মনে করেনি। যারা সাম্প্রতিক যৌথবাহিনীর অভিযানকে বন্ধ করার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে তারা বিবিসির এ প্রতিবেদনে খুশি হলেও অন্তত পক্ষে সুস্থ বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন কোন পাঠক এ সংবাদে নিরপেক্ষতা খুঁজে পায় নি।
প্রকৃতপক্ষে, গতবছরের ৩ অক্টোবর থেকে পাহাড়ে নতুন আত্নপ্রকাশ করা কেএনএফ ও তাদের মিত্র জঙ্গী সংগঠনের সন্ত্রাসবাদ রুখে দিতে শুরু হওয়া অভিযানের পর থেকেই সন্ত্রাসীরা তাদের বেশ কিছু আস্তানার (তাদের ভাষায় ক্যাম্প) নিয়ন্ত্রন হারিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়। যা গত বছরের ১৯ অক্টোবর তারিখে কেএনএফ তাদের ফেসবুক পেইজেও এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে স্বীকার করে নেয়। সেখানে তারা প্রথমবার দাবি করে, সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস নিরাপত্তাবাহিনীকে ভুল বুঝিয়ে কেএনএফের বিরুদ্ধে অভিযানে নামিয়ে দিয়েছে।
এরমাত্র দুই দিন পর ২১ অক্টোবর ৭ জঙ্গী ও ৩ কেএনএফ সন্ত্রাসীকে বিপুল পরিমান অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আটক করে র্যাবের আভিযানিক দল। কেএনএফ প্রধান নাথান বমসহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় মামলা।
অনুসন্ধান বলছে, বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়িতে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান শুরু হলে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে ও আস্তানাগুলোর নিয়ন্ত্রন ধরে রাখতে রুমা উপজেলার মায়ানমার-ভারত সীমান্তবর্তী রেমাক্রী প্রাংসা ইউনয়নের থিংদলি, রোমানা পাড়া, চুংসং পাড়া, চাইক্ষিয়াং, থাইক্ষ্যাং পাড়াসেহ কেওক্রাডং ও তাজিংডং এবং পাইন্দু ইউনিয়নের মুয়ালপি পাড়াসহ এলাকাগুলোতে স্থানীয় বম, টংটঙ্গিয়া ও অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাড়াগুলোর নিয়ন্ত্রন নিতে চেষ্টা করে। এসময় তারা স্থানীয় স্বজাতি জনগোষ্ঠীর লোকজনের উপর নির্যাতন চালাতেও কুন্ঠাবোধ করে নি।
এ সময়গুলোতে নিরীহ গ্রামবাসীরা প্রাণ বাঁচাতে গ্রাম ছেড়ে, নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এর মধ্যে ৪০ জনের একদল গ্রামবাসী গত ২৮ জানুয়ারি শনিবার রুমা উপজেলা সদরে এসে আশ্রয় নেয়। তাৎক্ষনিক উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা নিরাপত্তাবাহিনীর সহায়তায় তাদের মারমা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন কার্যালয়ে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় খাদ্য ও অন্যান্য সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা হয়।
এর বাইরেও কিছু সংখ্যক গ্রামবাসী, যারা মিয়ানমার ও ভারতের মিজোরাম সীমান্তবর্তী এলাকার গ্রামগুলোতে বসবাস করেন, তারা নিজেদের বাড়ি ঘর ছেড়ে মিজোরাম সীমান্ত ও কয়েকটি পরিবার সীমান্ত পেরিয়ে মিজোরাতে আশ্রয় নেয়। এখানে একটি বিষয় পাঠকদের জানিয়ে রাখা দরকার- মিজোরামে আশ্রয় নিতে স্থানীয় লোকজন যে সীমান্ত এলাকা ব্যবহার করেছে সেটি বাংলাদেশের অরক্ষিত সীমান্ত হলেও ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফ (সীমান্তরক্ষী বাহিনী) দ্বারা সুরক্ষিত রয়েছে। তবে সূত্র বলছে, বম সম্প্রদায়ের লোকজন ভারতে প্রবেশকালে তাদের কোন প্রকার বাঁধা দেয় নি বিএসএফ সদস্যরা। এ সুযোগটি নিয়েই মূলত কিছু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ফের বাংলাদেশী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কিছু সংখ্যক লোকজনকে মিজোরামে পাঠায়। আর এ সুযোগটাই নেয় বিবিসি বাংলার মতো গণমাধ্যমগুলো।
বিবিসি বলছে, ‘দক্ষিণ মিজোরামের লংৎলাই জেলার পাঁচটি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন ওই বাংলাদেশি নারী-পুরুষরা। মিজোরাম সরকার এবং সেখানকার খ্রিস্টানদের শক্তিশালী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়াং মিজো অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা নারী পুরুষদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছে বলে জানিয়েছে। নিয়মিত খাবারও দিচ্ছে তারা।’
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন অবশ্য বলছে তারা দেশ থেকে পালিয়ে যায়নি, নিরাপত্তা জনিত কারণে কিছু লোকজন চলে গেছে। এমনিতেই তারা মিজোরাম রাজ্যে আসা যাওয়া করে, ওখানে তাদের অনেক আত্মীয়স্বজন আছে। অভিযানের কারণে কেএনএফের নির্যাতনের মুখেই তারা সেখানে চলে যান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা আবারও দেশে ফিরে আসবেন বলেও মত তাদের।
পুলিশ বলছে, “অভিযানটা চালানো হচ্ছে কেএনএফের বিরুদ্ধে। ওই সংগঠনের সদস্য যারা, তারা তো এই সম্প্রদায়েরই মানুষ। তারা তো জানে কোন পরিবারের কে ওই সংগঠনের সদস্য। সেখানে তো কেএনএফের সদস্যরা সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। তাই যখন অভিযান জোরদার হয়েছে, তখন গোলাগুলি দেখে সাধারণ মানুষদের কেউ আতঙ্কে হয়তো চলে গেছে। কিন্তু কেউ তাদের চলে যেতে বাধ্য করেনি,”
সূত্রগুলো বলছে, পার্ভা-৩ গ্রামে আশ্রয় নেয়া বাংলাদেশীদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন মিজোরামের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী লালরুয়াতকিমা। তিনি জানান, “বাংলাদেশ থেকে আসা আশ্রয় প্রার্থীরা মিজোদেরই বৃহত্তর পরিবারের মানুষ। আমাদের পূর্বপুরুষদের কেউ বান্দরবানের দিকে, কেউ এই মিজোরামে, কেউ আবার এখনকার মিয়ানমারে থাকতেন। এখনও আমাদের অনেক আত্মীয়স্বজন বান্দরবান-মিয়ানমারে থাকে। তাই এরা আমাদের পরিবারেরই সদস্য, সেই হিসাবেই আমরা তাদের দায়িত্ব নিয়েছি।"
মিজোরামের বিধানসভায় একটি প্রস্তাবও পাশ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে এই আশ্রয়প্রার্থীরা মিজোদের ভাইবোন, তাই তাদের খাদ্য, বাসস্থান ইত্যাদির ব্যবস্থা করা মিজোরাম রাজ্যের দায়িত্ব। একই সঙ্গে আশ্রয়প্রার্থীদের যাতে সীমান্তে বিএসএফ না আটকায়, তার জন্য মিজোরাম সরকার দিল্লিকে অনুরোধ করেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন থেকে পাহাড়ে নতুন গজিয়ে ওঠা সংগঠন কুকি চিন ন্যশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গ্রামবাসীদের ওপর হুমকি-নির্যাতন চালাচ্ছে। হুমকির মূখে বম সম্প্রদায়ের আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা এলাকা ছেড়ে সীমান্তের দিকে পাড়ি জমিয়েছে।
জানা যাচ্ছে, চলমান অভিযানের কারণে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে রুমা উপজেলার সীমান্তবর্তী দুর্গম বিভিন্ন পাড়ায় অবস্থান করছে এব পাড়াবাসীকে চাপের মুখে এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য করছে।
মুলত: পাহাড়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গী বিরোধী যৌথবাহিনীর সাড়াঁশি অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ও অভিযান রুখে দেয়ার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেশের অভ্যন্তরীন সমস্যাকে আন্তর্জাতিক ষড়যন্তের রুপ দিতেই জোর পূর্বক অস্ত্রের মুখে নিরীহ বম সম্প্রদায়ের লোকজনকে সীমান্ত পাড়ি দিতে বাধ্য করছে।
আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন আইডি ও পেজ খুলে সেখানে অব্যাহতভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে চালানো হচ্ছে অপপ্রচার। এর মধ্যে কেএনএফ পরিচালিত বে কিছু আইডিও রয়েছে।
প্রকারান্তরে, গত ১২ মার্চ রবিবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ ও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় মা ও শিশুদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের উদ্দেশে গমনকৃত দলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনাসদস্যদের ওপর কেএনএফ সন্ত্রাসীদের গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই নাজিম উদ্দিন নামের একজন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। নিহত নাজিম উদ্দিন সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার ছিলেন। রংপুর সদরের ঘাঘটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত শমসের আলীর ছেলে নাজিম ৩০ বছর ধরে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছেন বলেও জানা যায়। এ ঘটনায় আরো দুই সেনা সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
গত ২২ মার্চ বুধবার বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে কেএনএফ এর সন্ত্রাসী কার্যক্রমে সমর্থন ও তাদের সহায়তা না করায় নিজ গোত্রের এক বম পাড়া প্রধান (কারবারি) গুলি করে হত্যা করে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা। নিহত থিয়ান চুয়াল বম (৭৪) উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রামথার পাড়ার কারবারি (পাড়া প্রধান) ছিলেন। ওইদিন বিকেলে রামথার পাড়ার জঙ্গল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একইসঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে ৩টি দেশীয় বন্দুক উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া, গত ১৫ মার্চ রুমা উপজেলার কেওক্রাডংস্থ নির্মাণাধীন বগালেক-কেওক্রাডং-ধুপপানিছড়া সড়কে ঠিকাদারি কাজ দেখাশোনা করতে গিয়েছিলেন মোঃ আনোয়ার হোসেন নামের সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এক সার্জেন্ট। আনোয়ার সেনাবাহিনী থেকে বছরখানেক আগে অবসর নেওয়ার পর ঠিকাদারি কাজ করে আসছেন। এ সময় ট্রাকচালক মো. মামুন (২৯) ও শ্রমিক আব্দুর রহমানসহ (২৭) তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় কেএনএফের সদস্যরা। পরে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও তাকে আটকে রাখা হয়। এরপর তাকে আটকে রেখে নিজেদের ফেসবুক পেজে বেশ কয়েকবার নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে আটক কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দেয়ার জন্য প্রস্তাবও দেয় সংগঠনটি। এরপর ৩০ মার্চ বিজিবির পক্ষ থেকে কেএনএফকে একটি শান্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এরপর, দীর্ঘ ১৬ দিন আটকে রাখার পর গত ৩১ মার্চ শুক্রবার বিকেলে রুমার বগালেক এলাকায় সার্জেন্ট (অব.) আনোয়ারকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে তাঁর মুক্তির জন্য অপহরণকারীদের ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন।
এর বাইরে সাম্প্রতিক সময়ে কেএনএফ প্রধান নাথান বমের বাল্যবন্ধু কিম ডেভিট বম নিজ বন্ধু নাথান বমকে উদ্দেশ্যে করে একটি চিঠি দিয়েছেন। যেটি পরবর্তীতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিতও হয়েছে।
বিবিসি বাংলার দৃষ্টি আকর্ষণ করে উক্ত চিঠিটি এখানে হুবুহু তুলে ধরলাম-
“খোলা চিঠি
আমি- কিম ডেভিড বম (৪৮), পাইন্দং ইউনিয়ন, রুমা বাজার, রুমা।
বৃষ্টি বিঘ্নিত আজ এই দিনটিতে নস্টালজিতে পড়ে যাই। যখন প্রয়াত ডক্টর. ভূপেন হাজারিকার সেই গানটি শুনি-
"শরৎ বাবু!!
খোলা চিঠি দিলাম তোমার কাছে,
তোমার মহেষ গফুর এখন কোথায় কেমন আছে?
তুমি জানো না??
হারিয়ে গেছে কোথায় তোমার গফুর, আমনা।
এ চিঠি পাবে কিনা জানিনা??
তুমি, এ চিঠি পাবে কিনা জানিনা!!
(বন্ধুবর নাথান বমের ক্ষেত্রে এ গানটি প্রযোজ্য)
প্রিয় বন্ধুবর নাথান- তোমার স্ত্রী, পুত্র, ভাই-বোন, অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন এখন কোথায় কেমন আছে। জানো কি তুমি??
প্রায় দীর্ঘ পাঁচ বছর পর এবার ঢাকা থেকে এলাম। চৈত্র সংক্রান্তিতে, কোনো এক বৃষ্টিস্নাত দিনে, রুমা উপজেলায় আমার ছোট টিনের চালের নিজ গৃহের জানালায় বসে বৃষ্টির শব্দ শুনছি এবং নিষ্পেষিত-নিপীড়িত বম সম্প্রদায়ের দুঃখ কষ্ট দেখে তোমার স্মৃতিকে অবগাহন করছি। কি স্বপ্ন বিভোর তোমাকে পেয়ে বসেছে? তুমি কোথায় ছিলে! কি ছিলে! সবই আমার জানা। মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াতে। এক সময় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) সমর্থন করতে। সন্তু বাবু তোমার সমস্ত পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছিল। খাগড়াছড়িতে প্রয়াত মানবেন্দ্র লারমার মূর্তি বানিয়ে তুমি পেয়েছিলে বিশাল অঙ্কের টাকা। সেই তোমার উত্থান।
আজও পড়ে আছে কেএনডিওর ভাঙ্গা ঘরটি। যাহার উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন। কিন্তু তুমি হয়ে গেলে ভিন্ন পথের পথিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নের সময়েও তোমার ছিল না তেমন পরিচিতি। ২০১৮ সালে হঠাৎ করেই তুমি এমপি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। তুমি করে পেলেছ সুরম্য প্রসাদ অট্টালিকা। কতই না পরিবর্তন তোমার! আজ তোমার কি মতিভ্রম ঘটেছে? তাই খোলা চিঠি দিলাম তোমার কাছে। তোমারই বন্ধু ডেভিড। তুমি এ চিঠি পাবে কিনা জানিনা!!
শুনলাম, মুয়ালপি পাড়া, আরথাহ্ পাড়া, বাসত্লাং পাড়া, রেমাক্রি-প্রাংসা পাড়ার সব মানুষ ভয়ে পাড়া ছেড়ে রুমা উপজেলার জনপ্রতিনিধির কাছে, কেউ উপজেলা প্রেক্ষাগৃহ বা আশ্রয় কেন্দ্রে, কেউবা উপজেলা কমপ্লেক্সে আশ্রয় নিচ্ছে। এই সংবাদ পেয়ে, নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। ছুটে গেলাম স্বজাতির হৃদয়ের রক্তক্ষরণ এবং পাড়া ত্যাগের কারণ জানতে।
মুখোমুখি হলাম এসব লাঞ্চিত মানুষগুলোর। তাকিয়ে লক্ষ্য করলাম, তারা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র হতদরিদ্র আমাদেরই নৃতাত্ত্বিক স্বজাতি গোষ্ঠী। তারপরও একটু এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তোমরা কারা? কোথায় থেকে এসেছ? তখন তারা অশ্রুশিক্ত নয়নে জবাব দিলো- আমরা বম, খেয়াং, খুমি, পাংখোয়া, ম্রো সম্প্রদায়ের লোক। আমরা পাইন্দং ইউনিয়নের মুয়ালপি পাড়া, আরথাহ্ পাড়া, বাসত্লাং পাড়া, রেমাক্রিপ্রাংসা ইউনিয়নের পাকনিয়ার পাড়া, মুননুয়াম পাড়া, জেসপাই পাড়া নিবাসী।
একটু কৌতুহলী হয়ে প্রশ্ন করলাম, তোমরা এখানে কেন? কেউ ভয়ে মুখ খুললো না। সবার মুখে আতংকের চাপ। আমার প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আরেকটু এগিয়ে গেলাম। দেখি, ষাটোর্ধ বয়সী এক বৃদ্ধ আকাশের পানে চেয়ে আছে। খেয়াল করে দেখলাম খোঁচা খোঁচা পাঁকা দাঁড়িতে, কংকালসার শরীরে জামার একটি মাত্র বোতাম আটকানো। নাম তার- নিকোলাস বম। কাছে যাওয়া মাত্রই হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। তখন আমি জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে নিলাম। কাঁদো কাঁদো কন্ঠে আমার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করলো। বললো- দাদা, আমাদের স্ব-গোত্রীয় নেতা নাথান লনচেও বমের তৈরি করা কুকি চিন আর্মিদের কাছে সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে পাড়া ত্যাগ করেছি।
আমি প্রশ্ন করলাম, তাদের কাছে কেন বিলিয়ে দিয়েছ? কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো- আর কত অত্যাচার সহ্য করবো দাদা? আমরা নিতান্ত হতদরিদ্র। জুম চাষ করে বেঁচে আছি। চাষাবাদ করে কষ্টার্জিত সেই গোলার চাল, ডাল, মারপা, ভূট্টা, শুকনা রশদ, শুটকি সবই প্রতিনিয়ত বাসায় এসে ছিনিয়ে নিয়ে যায় কুকি চিন আর্মির (KNA) সশস্ত্র লোকেরা। আমার ঘরের পালা মুরগী, বন্যা (শুকর), পাঠা-ছাগল এবং একমাত্র গয়ালটিও তাদের রক্তচক্ষুর হাত থেকে রক্ষা পায়নি। তার অভিব্যক্তি আমার হৃদয়ে নাড়া দিয়ে গেলো। আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না যে, স্বজাতির বন্ধুবর নাথান কর্তৃক গঠিত কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মির নির্যাতন এবং অমানবিক পাষণ্ডতায় তাদের এই করুন অবস্থা। যাদের থেকে ১৪ বছরের কিশোরী লিপিকা বমও রেহাই পায়নি। লেখাগুলো লিখতে লিখতে কলম কেমন জানি জড়িয়ে যাচ্ছিলো!!
তোমার কুকি চিন আর্মির এই নৃশংসতার কথা অনুধাবন করতেই আমার ঠিক পিছন দিক থেকে একটি কথার আওয়াজ ভেসে আসলো।"আমরা থাকতে আপনারা ভয় পাবেন না, আমরা সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে সব সময় আপনাদের পাশে আছি। পিছন ফিরে দেখি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল এসে তাদের তদারকি করছে। সাথে ছিল- বিশাল এক ডেক্সিতে রান্না করা খাবার, পানির ড্রাম আর কার্টুন ভর্তি ঔষুধ।
দেখেই বুঝতে পারলাম, এই মানুষগুলোর এমন করুন পরিস্থিতির খবর পেয়ে মানবিকতার টানে ছুটে এসেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও জনপ্রতিনিধিগণ।
কয়েকজন এসেই এক দিক থেকে খিচুড়ি এবং সিদ্ধ ডিম বিলিয়ে দেয়া শুরু করলো। আর অন্যদিকে সুদর্শন ও সুঠামদেহী এক ভদ্রলোক (মনে হলো সেনাবাহিনীর ডাক্তার) এক এক করে এই অপরিচিত মানুষগুলোর পালস, বিপি চেকআপ করে যাচ্ছে। এই দৃশ্য অবলোকন করে, আমি হতচকিত হয়ে গেলাম।
পরক্ষণে শুনতে পেলাম, শুধু এরাই নয়! বিগত দিনগুলোতে পাইন্দং ইউনিয়নের অনেক মানুষ’ তোমার কুকি চিন আর্মির নির্যাতনের ভয়ে নাকি আন্তর্জাতিক সীমারেখা পার হয়ে পার্শ্ববর্তী মিজোরামেও আশ্রয় নিয়েছেন। তাছাড়া গত ৫ মাস ধরেই নাকি পাইন্দং ইউনিয়নের- মুয়ালপি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আরথাহ্ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাসত্লাং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং রেমাক্রিপ্রাংসা ইউনিয়নের- পাকনিয়ার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুননুয়াম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জেসপাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এতে শিশুদের পড়াশোনাও বন্ধ রয়েছে । বন্ধ রয়েছে সকল ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য। মানুষের বাসায় নাকি বাজারের পয়সাও নেই। আর্থসামাজিক অবস্থানও পৌঁছে গিয়েছে নিম্নতর স্তরে।
মানুষগুলোর এমন পরিস্থিতির কারণ আরও গভীরভাবে জানতে চাইলাম। সর্বস্তরেই শুনলাম- তোমার গঠিত বিচ্ছিন্নতাবাদী কুকি চিন আর্মিই নাকি তাদের এমন পরিস্থিতির জন্য দায়ী। তোমার সন্ত্রাসীরা নাকি নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য অপহরণ, চাঁদাবাজি, জনসাধারণের ঘরে লুটপাট চালিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নেওয়াসহ এহেন কোনো কর্ম নাই, যা তারা করছেনা। ইদানিং তুমি নাকি জঙ্গী মদদ দাতাও হয়ে উঠেছ।
নিরাপত্তা বাহিনী থেকে শুনলাম, তোমাদের নির্দিষ্ট কোনো লোকেশন নাকি তাদের কাছে জানা নেই। যার পরিপ্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে নি তারা।
এলাকায় খবর নিয়ে জানতে পারলাম, তোমার বউ-ছেলে ও ভাইয়েরা রুমাতেই অবস্থান করছে। তোমার স্ত্রী স্বাস্থ্যকর্মীর চেহারার কি নাজেহাল অবস্থাই না হয়েছে। তোমার বাচ্চারাও না খেয়ে দিনাতিপাত করছে। অথচ, তুমি মিজোরামে অট্টালিকা বানিয়ে আছো মহা সুখে। শুনলাম ওখানে নাকি দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বিয়ে করে কেএনএ এর চাঁদার টাকায় বেশ ভালোই মনোরঞ্জনে আছ! কিছুদিন আগেও ২ নং ওয়ার্ড ইডেনপাড়ায় গিয়েছিলাম। সেখানে তোমার বড় ভাই লিয়ান দাদা ও রপই এর খোঁজ নিলাম। তোমার রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলার জন্য নাকি তারাও পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
সম্প্রীতির বান্দরবানে আমরা তো বেশ ভালোই ছিলাম। তাহলে কেন তোমার এত উচ্চাকাঙ্ক্ষা? নিজের ইচ্ছা, উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য তুমি আজ স্বজাতি এমনকি নিজের পরিবার পরিজনকেও বিসর্জন দিয়েছো! তাই তোমার কাছে আমার খোলা চিঠি। তুমি অতিঃসত্ত্বর আত্মসমর্পণ করে এই লাঞ্চণা-বঞ্চণা থেকে পরিত্রাণ দাও আমাদের স্বজাতি ও অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীকে।
বন্ধুবর নাথান, এ চিঠি পাবে কিনা জানিনা??
তুমি...এ চিঠি পাবে কিনা জানিনা!!
সরকারের কাছে আমার আকুতি- অতিঃসত্ত্বর যেন কুকি চিন আর্মিকে আইনের আওতায় আনা হয়। নচেৎ জাতিসত্তা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, আমাদের ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী ও পাহাড়ি-বাঙালির সম্প্রীতির বন্ধন ছিন্ন হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।”
কিম ডেভিট বমের উক্ত খোলা চিঠিটি পড়ে সুস্থ বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন যে কেউ খুব স্বাভাবিকভাবেই বুঝতে পারবেন কেন নিরীহ পাড়াবাসীরা নিজ বাড়িঘর ছেড়ে সীমান্তে ও মিজোরামে আশ্রয় নিচ্ছে? এর জন্য দায়ী আসলে কারা? কিভাবে নিরীহ পাহাড়িরা কেএনএফের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে?
পরিশেষে, বিবিসি বাংলাসহ অপপ্রচার চালিয়ে কিংবা সত্য-মিথ্যার জোড়াতালি দিয়ে স্বার্থান্বেষী মহলকে খুশি রাখতে চাওয়া দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমগুলোকে বলতে চাই, তথাকথিত একটি অভিযোগ তুলেই দায়িত্ব শেষ করা যায় না। বরং আজ না হয় কাল, সত্য প্রকাশিত হবেই, নিজেদের কুৎসিৎ চেহারা পাঠকের সামনে উন্মোচিত হবেই। নিরপেক্ষতা ধরে রেখে সত্য ও সুন্দরের পক্ষে সংবাদ প্রকাশ করে পাঠকের কাছে আরো বেশী তথ্য নির্ভর ও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বিবিসি বাংলা, এ প্রত্যাশাই করি।
করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]
- গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের `এ`ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল
- ডা. আফছারুল আমিনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
- কোনো ভাবেই প্রতিপক্ষের অপশক্তিকে দুর্বল ভাবা যাবে না: আ জ ম নাছির
- দেশপ্রেম আছে বলেই আমরা বারবার বিজয়ী হয়েছি: অর্থমন্ত্রী
- আগামী তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে চলমান তাপপ্রবাহ
- সেনাবাহিনীর দখলে কেএনএফের বৃহৎ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
- ছয় দিনের সরকারি সফরে তুরস্কে গেলেন রাষ্ট্রপতি
- আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকা থেকে ট্রেনে কক্সবাজার যাওয়া যাবে
- খাগড়াছড়িতে যাত্রা শুরু করল সপ্তসুর সংগীত একাডেমি
- বাজেট ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে সহায়ক হবে
- যেভাবে হবে ‘স্মার্ট’ বাংলাদেশ
- বাজেট: স্বাগত জানিয়ে আ.লীগ, ছাত্র ও যুবলীগের আনন্দ মিছিল
- ২০২৫ সালের মধ্যে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা ৩০ লাখ নির্ধারণ
- আগামী অর্থবছর থেকেই সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি চালু: অর্থমন্ত্রী
- বাজেটে নারী শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষায় সুযোগ বাড়ছে
- বাজেট এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে মানুষের কষ্টটা লাঘব হবে: কাদের
- খাগড়াছড়ি শহরে ভিন্ন রকম উদ্যোগ লুটাস সুইমিংপুল
- কমলো এলপিজির দাম
- করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা
- দাম কমতে পারে যেসব পণ্যের
- বাজেট ২০২৩-২৪: দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের
- রিটার্ন দাখিলে দিতে হবে ২ হাজার টাকা
- কৃষিযন্ত্রে করছাড়ের প্রস্তাব বাজেটে
- পাহাড়ে আইইডি বিস্ফোরণে সেনা সদস্য নিহত
- বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উপহার সামগ্রী দিল খাগড়াছড়ি রিজিয়ন
- ড. ইউনূসের কর ফাঁকি, দিতে হবে ১৫ কোটি টাকা
- স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করবে সরকার
- বেতন বাড়বে সরকারি কর্মচারীদের
- জাতিসংঘের এজেন্ডায় একাত্তরে গণহত্যার স্বীকৃতি
- সংকট উত্তরণের বাজেট, করজাল বিস্তারের পরিকল্পনা
- এবার বাবা-মেয়ে একসঙ্গে দিচ্ছেন এসএসসি পরীক্ষা
- কক্সবাজার থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হল ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ
- মিষ্টি স্বাদের লিচুতে সয়লাব পাহাড়ি বাজারগুলো
- মাটিরাঙ্গা বাজার এখন মৌসুমি ফলের দখলে
- খাগড়াছড়িতে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামী গ্রেফতার
- শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেল বেদে পল্লীর মানুষগুলো
- ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে রবিবার ৩ বিভাগে এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত
- রামগড়ে ধর্ষণ মামলায় কারাগারে ধর্ষক ও সহযোগি
- পানছড়িতে সেতুর রড চুরি, নির্দোষ ব্যক্তিকে ফাঁসানোর চেষ্টা
- মিজোরামে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ২ কেএনএফ সদস্য আটক
- সনদ পুড়িয়ে ফেলা ইডেন শিক্ষার্থীকে চাকরি দিলেন পলক
- মহালছড়িতে অস্ত্রসহ ১ ইউপিডিএফ সদস্য আটক
- পাহাড়ের সমস্যা সমাধানে শান্তি চুক্তি অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে
- আইডিএলসি ও প্রথম আলো ট্রাস্টের অদ্বিতীয়া খাগড়াছড়ির হেনা ত্রিপুরা
- কেএনএফ আতঙ্কে গ্রাম ছাড়া রুমার ১১ পরিবার
- রসালো ফলে ভরে উঠেছে পাহাড়ের বাজার
- খাগড়াছড়িতে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত
- আম উৎপাদনের ‘নতুন রাজধানী’ এখন খাগড়াছড়ি
- ৪ কিশোরী খেলোয়াড়কে রিজিয়ন কমান্ডারের উপহার প্রদান
- মোখা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রাখতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার