মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ৫ ১৪৩০
|| ০৮ রমজান ১৪৪৫
দৈনিক খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২০
দুটি বেসরকারি ও একটি রাষ্ট্রায়ত্তসহ তিন ব্যাংক তালিকাভুক্ত হচ্ছে শেয়ারবাজারে। চতুর্থ প্রজন্মের বেসরকারি খাতের দুটি ব্যাংক এনআরবিসি ব্যাংক ও সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য ইতিমধ্যে আইপিও অনুমোদন পেয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক শেয়ারবাজার তালিকাভুক্ত থাকলেও নতুন করে ১৫ শতাংশ শেয়ার বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে। বিষয়টি সরকারি চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
জানা গেছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বর্তমান কমিশন গঠিত হওয়ার পর শেয়ারবাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে বেশ কিছু কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন প্রজন্মের দুটি ব্যাংকের আইপিও অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে এনআরবিসি ব্যাংক বাজার থেকে ১২০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। বর্তমানে এনআরবিসির নেট অ্যাসেট ভ্যালু ১৩ টাকা ৮৬ পয়সা ও শেয়ারপ্রতি আয় ১ টাকা ৫০ পয়সা। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিনিয়োগকারীদের আবেদন নেওয়া শুরু হবে। এ ছাড়া সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক বাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। শেয়ারবাজার থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন পেয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের পর বিএসইসিতে আবেদন করার পর আইপিও চূড়ান্ত করা হবে। চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক হিসেবে সরকার নয়টি ব্যাংক অনুমোদন দেয়। তিন বছরের মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির বাধ্যবাধতা থাকলেও কোনো ব্যাংক এখন পর্যন্ত তালিকাভুক্ত হয়নি। প্রথমবারের মতো এই দুটি প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে ২০১৪ সালে অনুমোদনপ্রাপ্ত নয় ব্যাংকের মধ্যে অনিয়ম জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। নামে বেনামে ঋণ জালিয়াতি ছাড়াও অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের পর্ষদ সদস্যদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে এনআরবিসি ব্যাংকের পর্ষদের বিরুদ্ধে। ২০১৭ সালের শেষ দিকে পুরো পর্ষদ সরিয়ে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়। সম্প্রতি কুয়েতে অর্থ পাচার ও জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত পাপুল এই পর্ষদেরই সদস্য ছিলেন। যদিও অভিযোগ ওঠার পর তাকে অপসারণ করা হয়। বর্তমান পরিচালকদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে ১৪৭ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ দুদক তদন্ত করছে। অনিয়ম জালিয়াতির অভিযোগ থাকা দুটি ব্যাংকের আইপিও অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি।
এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক ১৯৮৬ সালে তালিকাভুক্ত হলেও সম্প্রতি আবারও ১৫ শতাংশ সাধারণ শেয়ার বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে বাজারে ৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে রূপালী ব্যাংকের। রাষ্ট্রায়ত্ত আরও তিন বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের শেয়ার ছাড়ার কোনো উদ্যোন না নিয়ে রূপালী ব্যাংকের শেয়ার ছাড়া হচ্ছে। রূপালী ব্যাংকের শেয়ার ছাড়া নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাদের দাবি শেয়ার বিক্রি করা হলে তার একটি অংশ প্রতিষ্ঠানটির সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে বিক্রি করা হোক। কিন্তু সরকার চাচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক ও করপোরেট বিনিয়োগকারীদের হাতে বিক্রি করতে। তবে ১৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করা হলে বাজারে বড় প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাজারে বর্তমানে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংক রয়েছে। এই ত্রিশ ব্যাংকের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর দীর্ঘ দিন ফেসভ্যালুর কাছাকাছি। কোনো কোনো ব্যাংকের শেয়ার দর ৫ থেকে ৮ টাকা। পরিচালকদের অনিয়ম জালিয়াতির কারণে ব্যাংকগুলো বছর শেষে লভ্যাংশ দিতে পারে না। এই পরিস্থিতি নতুন এসব ব্যাংকে শেয়ার তালিকাভুক্ত হচ্ছে। জানতে চাইলে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেছেন, শেয়ারবাজারে সবচেয়ে দুর্বল খাত টেক্সটাইল। এরপরেই ব্যাংক খাতের অবস্থান। যে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে তারা এসে কি করবে এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে বাধ্যবাধকতা হিসেবে তারা বাজারে আসছে। এ ছাড়া রূপালী ব্যাংক ছাড়া রাষ্ট্রীয় অন্য ব্যাংকগুলোকেও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করা উচিত। তাতে বাজার আরও শক্তিশালী হবে।
করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]
দৈনিক খাগড়াছড়ি Dainik Khagrachari
সর্বশেষ
জনপ্রিয়