শিমের লবণসহিষ্ণু নতুন জাত উদ্ভাবন
দৈনিক খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২১
ছবি- সংগৃহিত।
গাজীপুরস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের একদল গবেষক দীর্ঘ সময় ধরে গবেষণা শিমের একটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন। সম্প্রতি জাতীয় বীজ বোর্ড অনুমোদিত নতুন বিইউ শিম-৭ জাতটি লবণসহনশীল ও উচ্চফলনশীল হওয়ায় বাংলাদেশের বিস্তৃত দক্ষিণাঞ্চলে শীত মৌসুমে পতিত থাকা জমির সুষ্ঠু ব্যবহার এবং সেই সাথে বেশি সবজি উৎপাদন বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হবে বলে কৃষি বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রফেসর ড. মো: গোলাম রসুল এতে নেতৃত্ব দেন।
প্রফেসর ড. মো: গোলাম রসুল জানান, শিম বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় শীতকালীন সবজি। গ্রাম-বাংলার প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায় এ ফসলটি আদিকাল থেকে আবাদ হয়ে আসছে। অধুনা শিমের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করে দেশের বহু স্থানে মাঠে ব্যাপকভাবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শিম চাষ হচ্ছে। আবাদের বিস্তৃতি ও পুষ্টিমানের বিবেচনায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ ছাড়াও শরীরের মাংস গঠন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন শিম থেকে পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম কচি শিম থেকে ৪-৫ গ্রাম প্রোটিন, ১০ গ্রাম শে^তসার, ০১ গ্রাম স্নেহ, ২ গ্রাম অম্ল ও কিছু পরিমাণ বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়।
প্রফেসর ড. মো: গোলাম রসুল আরো জানান, নতুন উদ্ভাবিত জাতে গাছপ্রতি ২ দশমিক ৪ থেকে ৩ দশমিক ৫ কেজি শিম উৎপদিত হয়। সেই হিসেবে হেক্টরপ্রতি সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ফলনশীলতা ৩৫ টন। এ ছাড়াও এই জাত ১২ ডিএস/এম লবণাক্ততা সহনশীল হওয়ায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১৯টি উপকূলীয় জেলাসহ সারা দেশে আবাদ করা সম্ভব।
তিনি আরো জানান, বিশ্বে টাটকা সবজিতে ০.৫ থেকে ৩২.০ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম অ্যান্থসায়ানিন পাওয়া যায়। তবে নতুন জাতটিতে উচ্চমাত্রায় অ্যান্থসায়ানিনের (২৯ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম) উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেছে। শিমের কাঁচা ফলে প্রাপ্ত অ্যান্থসায়ানিন হলো পোলিফেনোলিক রঞ্জক, যা পরাগায়ণে সাহায্যকারী পতঙ্গ এবং বীজ বিস্তরককে আকর্ষণ করে ফসলের বংশ বিস্তারের ক্ষেত্রে শুধু ভূমিকাই রাখে না বরং বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে গাছকে সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে। তা ছাড়া শাকসবজিতে প্রাপ্ত অ্যান্থসায়ানিনগুলো মানবদেহের ভাস্কুলার প্রদাহ হ্রাস এবং থ্রোম্বোসিস (রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধা) প্রতিরোধে যথেষ্ট কার্যকরী বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্বীকৃত হয়েছে। অধিকন্তু সেগুলো ক্যারাটিনোসাইট অ্যাওপটোসিসকে বাধা দিয়ে ইউভি তেজস্ক্রিয়তা তথা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। অ্যান্থসায়ানিন সমৃদ্ধ খাদ্যপণ্যগুলো তাদের আকর্ষণীয় রঙের কারণে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এবং তা মানব স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী বলে বিবেচিত হচ্ছে। নতুন এ জাতটি অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে রোপণ করলে ১৩০ দিনে ভক্ষণযোগ্য ফল সংগ্রহ করা যায়। তবে বীজ সংগ্রহের জন্য আরো ২০ দিন বেশি লাগবে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলেন, বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ধারণা ছাদ কৃষির জন্য নতুন অবমুক্ত এ জাতটি একটি চমৎকার নির্বাচন হতে পারে। কেননা ফলন ও গাছের আকার বিবেচনায় একটি গাছ ছোট একক পরিবারের শিমের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।
সংশ্লিষ্ট গবেষক বিইউ শিম-৭ উৎপাদন পদ্ধতি সম্পর্কে জানান, দেশের সব জেলাতে শীত মৌসুমে এই জাতের বীজ রোপণ করা যেতে পারে। গোবর-মাটির মিশ্রণে (অর্ধেক-অর্ধেক) ভরা ছোট পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করে পরে মাঠে গর্তে লাগানোই উত্তম। প্রতি গর্তে ১০ কেজি পচা গোবর, ১০ গ্রাম ইউরিয়া (দুইবারে), ৩০ গ্রাম টিএসপি ও ২০ গ্রাম পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে। বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা ৯০% বিবেচনায় নিয়ে প্রতি হেক্টরে ৪.০-৫.০ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। বীজ লাগানোর ১৩০ দিনের মধ্যে সবজি ফসল হিসেবে শিম সংগ্রহ করা যায়। তবে বীজ সংগ্রহের জন্য আরো ২০ দিন সময় বেশি লাগবে। প্রস্ফুটিত ফুলের রঙ বেগুনি এবং অ্যান্থসায়ানিনের উপস্থিতির দরুন ফলের রঙ গাঢ় লালচে বেগুনি, কাণ্ডের রঙ গাঢ় বেগুনি, পাতার রঙ গাঢ় সবুজ, ফলের আকার লম্বায় ১২ সেমি. ও চওড়ায় ২.৫ সে.মি, বীজের সংখ্যা ফল প্রতি গড়ে ০৪-০৫টি এবং ১০০টি বীজের ওজন ৪৪ গ্রাম। এক কঞ্চি বিশিষ্ট বাউনি বা মাচাচাষ পদ্ধতি অনুসরণ করে উৎপাদন করা সম্ভব বিধায় অল্প জায়গায় (১মি.´১মি. দূরত্বে প্রতি শতকে ৪০টি গাছ) বেশি সংখ্যক গাছ লাগানো সম্ভব হবে।
জাতটি সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো: গিয়াসউদ্দীন মিয়া বলেন ‘ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করে টেকসই উন্নয়ন বজায় রাখার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রফেসর ড. মো: গোলাম রসুলের নেতৃত্বে উদ্ভাবিত বিইউ শিম-৭ ব্যবহার করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ত পতিত জমি উৎপাদনের মূলধারায় আনয়ন করে সার্বিক কৃষি তথা সবজি উৎপাদনে আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে উপকূলীয় এলাকার কৃষকদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এক বিপ্লব ঘটানো সম্ভব হবে বলে আশা করি।’
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশে বছরে ২০ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে ১,৪৪,০৫০ টন শিম উৎপাদিত হচ্ছে (বিবিএস, ২০২০)। বিশে^র তুলনায় (১০ টন/হেক্টর) বাংলাদেশে প্রচলিত জাতগুলোর শিমের ফলন যথেষ্ঠ কম (৩-৬ টন/হেক্টর)। অধিকন্তু দেশের প্রায় সমস্ত জাতগুলো মৌসুমের একই সময়ে ফলন দেয় এবং বেশির ভাগ চাষি একই সময়ে তাদের শিম বাজারে নিয়ে আসে, ফলে শিমের বাজারমূল্য হ্রাস পায়। তা ছাড়া খরা, লবণাক্ততা, অতিবৃষ্টি, পোকামাকড় বা রোগবালাইয়ের আক্রমণে উৎপাদন কমে যায়। বাংলাদেশের মোট আয়তনের ৩৭% উপকূলীয় এলাকা। ওই এলাকাতে চাষ উপযোগী সবজি তথা শিমের অনুমোদিত উফশী তেমন জাত নেই। এমতাবস্থায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা, টেকসই খাদ্য উৎপাদন বজায় রাখা এবং খরা, অতিবৃষ্টি, লবণাক্ততার ঋণাত্মক প্রভাব প্রতিরোধসহ বিস্তৃত উপকূলীয় এলাকায় চাষযোগ্য নতুন জাত উদ্ভাবনই সর্বোত্তম ও বিকল্প উপায়।
করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]
- গুইমারায় প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
- খাগড়াছড়িতে ৫ দিনব্যাপী প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন
- রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের দাফন সম্পন্ন
- ফের আশা জাগাচ্ছে লালদিয়া চরের কনটেইনার টার্মিনাল
- মাঠ প্রশাসন সামলাতে হার্ডলাইনে সরকার
- ‘মাই লকারে’ স্মার্টযাত্রা
- এক সফটওয়্যারের আওতায় আসছেন সব সরকারি চাকরিজীবী
- জলবিদ্যুৎসহ নেপালের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান
- সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি: আট বিভাগে হচ্ছে মেলা
- শঙ্কা কেটে গিয়ে কৃষকদের মুখজুড়ে এখন স্বর্ণালি হাসি
- পর্যটন শিল্পের বিকাশ: কুয়াকাটায় বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ
- মুজিবনগর দিবসে সব অপশক্তিকে প্রতিহত করার অঙ্গীকার
- আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
- মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
- এনডিসি কোর্সের প্রতিনিধি দলের এফবিসিসিআই পরিদর্শন
- আজ থেকে শুরু হচ্ছে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪
- নির্বাচনের পর প্রথমবার ঢাকা সফরে আসছে মার্কিন প্রতিনিধি দল
- কুয়েতে নিজস্ব দূতবাসের জন্য প্লট পেল বাংলাদেশ
- তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ভোট ২৯শে মে
- ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব
- এখনও আলোচনার পথ বন্ধ হয়নি, কেএনএফ প্রসঙ্গে র্যাবপ্রধান
- দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান
- বৃক্ষের প্রতি মানবপ্রেম জাগ্রত হোক
- খাগড়াছড়িতে ৪০জনের মনোনয়নপত্র বৈধ, একজনের বাতিল
- যত্রতত্র পার্কিং আর ফুটপাত দখলে সংকীর্ণ হচ্ছে খাগড়াছড়ির সড়ক
- দীঘিনালায় যাত্রীর কাছ থেকে বেশী ভাড়া নেয়ায় জরিমানা
- ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপনে মানিকছড়িতে আলোচনা সভা
- কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ উপলক্ষে রামগড়ে অবহিতকরণ সভা
- ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে রামগড়ে র্যালি ও আলোচনা সভা
- বিভেদ মেটাতে মাঠে আওয়ামী লীগ
- খাগড়াছড়িতে আ.লীগ নেতার বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা
- বৃক্ষের প্রতি মানবপ্রেম জাগ্রত হোক
- অনিবন্ধিত ও অবৈধ নিউজ পোর্টাল বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে
- মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
- যত্রতত্র পার্কিং আর ফুটপাত দখলে সংকীর্ণ হচ্ছে খাগড়াছড়ির সড়ক
- মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- দীঘিনালায় যাত্রীর কাছ থেকে বেশী ভাড়া নেয়ায় জরিমানা
- খাগড়াছড়িতে মাসব্যাপী ঈদ আনন্দ ও বৈশাখী মেলা শুরু
- খাগড়াছড়িতে ৪০জনের মনোনয়নপত্র বৈধ, একজনের বাতিল
- রুমায় অস্ত্রসহ ৯ কেএনএফ সদস্য গ্রেফতার
- বিমানের জরুরি অবতরণ: বেঁচে গেলেন শতাধিক যাত্রী
- মাটিরাঙ্গায় অসহায়দের মাঝে বিজিবির অনুদান প্রধান
- রেমিট্যান্সে সুবাতাস, ১২ দিনে এলো ৮৭ কোটি ডলার
- উপজেলায় নির্বাচন: প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপি-জামায়াত নেতারাও
- মাটিরাঙ্গায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম উদ্বোধন
- রূপপুরে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু আগামী বছর
- প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব ও গাম্বিয়া সফর বাতিল
- মেয়াদি ঋণখেলাপি করার ক্ষেত্রে শিথিলতা তুলে নেয়া হচ্ছে
- ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে লালন করে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে