মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ৫ ১৪৩০
|| ০৮ রমজান ১৪৪৫
দৈনিক খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২০
ছবি- সংগৃহীত।
অন্য সব উন্নয়নশীল দেশ যখন কভিড-১৯-এ ধুঁকছে, বাংলাদেশ সেখানে বেশ ব্যতিক্রম। খুব সংগত কারণেই গত মে মাসে ধারণা করা হচ্ছিল, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি অচল হয়ে যাবে। এই অঞ্চলের ঘনবসতিপূর্ণ শহর, সেকেলে স্বাস্থ্য সুরক্ষা পদ্ধতি আর মহামারির জন্য অপ্রস্তুত সরকার—সব মিলিয়ে মহাবিপর্যয় যে হবে তা সবাই ধরেই নিচ্ছিল। কিন্তু অবাক করে দিল বাংলাদেশ। ১৬ কোটি মানুষের দেশটিতে মৃত্যুর হার তুলনামূলক অনেক কম। শুধু তা-ই নয়, এ বছর আশা করা হচ্ছে যে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে ৪ শতাংশের বেশি, যা বৃহৎ বাণিজ্যশক্তি ভারতের প্রবৃদ্ধির সঙ্গেও তুলনায় আসছে।
গত মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ভারতের চেয়ে বেশি। এখন আর হেনরি কিসিঞ্জারের মতো বাংলাদেশকে কেউ তলাবিহীন ঝুড়ি বলার সাহস করে না।
২০১৭ সাল থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপিয়ে দেওয়া বিভিন্ন শুল্কের কারণে ভিয়েতনামসহ কয়েকটি রাষ্ট্র বাদে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এ দেশের তৈরি পোশাক খাতকে সমুন্নত রেখেছে। অবশ্য এটি শুধু শুরু মাত্র। ভবিষ্যতে আরো সাবধানে এগোতে হবে সফলতা ধরে রাখার জন্য। আমার মতে, চারটি উপায় অনুসরণ করলে বাংলাদেশ দ্রুত মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হবে এবং ইউনিকলোর মতো আরো বড় বড় প্রতিষ্ঠান এখানে ব্যবসা করতে আসবে।
প্রথমে ‘ইজ অব ডুইং বিজনেস’-এর স্কোর উন্নত করতে হবে, অর্থাৎ সহজে ব্যবসা করতে পারার সূচকে দেশের অবস্থানকে ওপরে তুলতে হবে। বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা পর্যন্ত বলেছেন, তাঁদের পছন্দের জায়গা ভিয়েতনাম। কারণ সেখানে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য নেই।
দ্বিতীয়ত, আর্থিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদিও ভালো উদ্দেশ্যে এ বছরের শুরুর দিকে ব্যাংক সেক্টরকে চাঙ্গা করতে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ চালু করেছিলেন, তা আদতে কাজে আসেনি। কারণ আগে থেকেই ঋণখেলাপি সমস্যায় জর্জরিত ছিল ব্যাংকিং সেক্টর। তবে সুখবর হলো, সরকার করপোরেট বন্ড মার্কেট তৈরিতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে।
তৃতীয়ত, মানবসম্পদ উন্নয়নে বড় বিনিয়োগ করতে হবে। উপজাতি ও গোত্র সংঘাত যেখানে পাকিস্তান ও ভারতে উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ মুসলিমপ্রধান দেশ হয়েও তা থেকে মুক্ত থাকতে পেরেছে। বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের লৈঙ্গিক সমতার সূচকে জাপানের চেয়ে ৭১ ধাপ এগিয়ে এবং ভারতের চেয়ে ৬২ ধাপ এগিয়ে।
যে কার্যাদেশগুলো চীন বা ভারতের হাতছাড়া হচ্ছে সেখানে বাংলাদেশের সুযোগ রয়েছে। এর জন্য শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও উত্পাদনশীলতা বৃদ্ধিতে যথেষ্ট পরিমাণ ব্যয় করতে হবে।
এবং চতুর্থত, অর্থনীতিকে ডিজিটাইজ করতে হবে। যেমন—মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি অগ্রসরমান জাতির ডিজিটাইজেশন উদ্যোগের ফসল। এই অগ্রযাত্রা যেন আভাস দিচ্ছে—ভারত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একমাত্র পরাশক্তি নয়, সম্ভাবনা আছে অন্যদেরও।
করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]
দৈনিক খাগড়াছড়ি Dainik Khagrachari
সর্বশেষ
জনপ্রিয়