বিকল্প সারি সেচ পদ্ধতি: কমবে পানির অপচয় বাড়বে মুনাফা
দৈনিক খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ৪ জানুয়ারি ২০২১
ছবি- সংগৃহীত।
কৃষিপ্রধান এ দেশে নানা কারণে ক্রমশই নিচে নামছে ভূগর্ভস্থ পানির আধার। সেচের পেছনে খরচ বাড়ছে কৃষকের। তবে বিকল্প ফারো বা সারি সেচ পদ্ধতিতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কম পড়ে। ৩০-৩৫ ভাগ পানি সঞ্চয় হয়। ফলে মুনাফা হয় তিন থেকে দশ ভাগ বেশি।
সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৮৫ লাখ ৮৫ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে ৭৬ লাখ ১৪ হাজার ৫৭২ হেক্টর জমিতেই সেচ দিতে হয়। এসব সেচকৃত জমির শতকরা ৮০ ভাগে সেচ দেওয়া হয় অগভীর নলকূপের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট জানাচ্ছে, প্রচলিত সেচ ব্যবস্থাপনায় জমি ও ফসলে প্রকৃত চাহিদার চেয়েও দুই থেকে তিনগুণ বেশি পানি দেওয়া হয়। এতে পানির ব্যাপক অপচয় হয়। পানির এই অপচয় রোধে বিকল্প সেচ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় 'বিকল্প ফারো অথবা সারি সেচ পদ্ধতি' বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান ড. তৌফিকুল ইসলাম বলেন, 'রবিশস্যে ফারো সেচ পদ্ধতি এ দেশের প্রেক্ষাপটে খুবই উপযোগী। এতে পানির অপচয় শতকরা ৩০ ভাগ পর্যন্ত কমানো যায়।'
প্রচলিত পদ্ধতিতে পানির অপচয় :দেশে সেচকৃত জমির পরিমাণ আবাদি জমির শতকরা ৬০ ভাগ। এসব জমির শতকরা ১৫ ভাগে ভূ-উপরিস্থ এবং শতকরা ৮৫ ভাগে ভূগর্ভস্থ পানি দিয়ে সেচ দেওয়া হয়। বর্তমানে ৩৬ হাজার গভীর নলকূপ ও ১৬ লাখ অগভীর নলকূপ রয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় নিচে নেমে যাচ্ছে পানির স্তর। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর ভূগর্ভস্থ পানির স্তর তিন থেকে আট মিটার নেমে যাচ্ছে। সেচের জন্য মাটি থেকে পানি টানতে কৃষককে ব্যয় করতে হচ্ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী প্রতি কেজি বোরো ধান উৎপাদন করতে মাটির প্রকারভেদে তিন থেকে পাঁচ হাজার লিটার পানির প্রয়োজন। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ পানির অর্ধেকেরও বেশি অপচয় হয়। এই অপচয়ের আর্থিক মূল্য কয়েক হাজার কোটি টাকা।
'ফারো'তে কমবে দুশ্চিন্তা :'ফারো সেচ পদ্ধতি'র ব্যবহার শুরু হয় প্রথমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তামাকের চাষাবাদে। তবে ক্রমেই অন্য ফসলের ক্ষেত্রেও এটি ছড়িয়ে পড়ছে। ভবিষ্যতে এই পদ্ধতিটি বেশ সম্ভাবনাময়। আলু, টমেটো ও বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলিসহ বিভিন্ন রবিশস্যের ক্ষেত্রেও পদ্ধতিটি বেশ কার্যকর। এ পদ্ধতিতে একটি জমিতে সারি করে নালা বা ফারো তৈরি করা হয়। ফসলের বেডের দু'পাশে এই নালা করা হয়। যখন একটি নালায় সেচ দেওয়া হয়, তখন পাশের নালাটি শুস্ক রাখতে হয়। পরবর্তী সেচের সময় শুস্ক নালায় পানি দেওয়া হয়, আগেরটি শুস্ক রাখা হয়। এতে সেচের খরচ, পানির অপচয় ও সময় বাঁচে। রোগব্যাধির আক্রমণও কম হয়।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান ড. তৌফিকুল ইসলাম বলেন, 'রবিশস্যে কমপক্ষে তিনবার সেচ দিতে হয়। প্রচলিত পদ্ধতিতে শস্যের চাহিদার চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ বেশি পানি প্রয়োগ করা হয়। এতে পানির অপচয় হয়। আবার এ পদ্ধতিতে অনেক সময় জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে ফসলের গোড়া পচে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এমন প্রেক্ষাপটে রবিশস্যে ফারো সেচ একটি যুগান্তকারী পদ্ধতি।'
ড. তৌফিক আরও বলেন, 'এই সেচ পদ্ধতিতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কম পড়ে। এতে পরিবেশগত ঝুঁকিও কমে যাবে।'
কুষ্টিয়ায় তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আমিরুল হক বর্তমানে শীতকালীন সবজি নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তিনি ফারো সেচ পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিজের জমিতে প্রয়োগ করেছেন। আমিরুল হক বলেন, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচ নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। সামাজিক মাধ্যমে কৃষি বিষয়ক প্ল্যাটফর্ম 'কৃষিকথন' থেকে নতুন বিভিন্ন উদ্ভাবন সম্পর্কে জানি। ফারো পদ্ধতিতে খরচ ও অপচয় অনেকাংশে কমে আসবে।
এ ব্যাপারে কৃষিবিদ ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জহুরুল হক সরকার বলেন, কৃষি ও এর ব্যবস্থাপনাকে টেকসই করতে গবেষণালব্ধ প্রযুক্তিগুলোকে দ্রুতগতিতে সম্প্রসারণ করা দরকার। বিকল্প ফারো সেচ পদ্ধতি পানির অপচয় রোধে বেশ কার্যকর একটি পদ্ধতি। এতে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খরচও কমানো যায়।
তিনি বলেন, টেকসই কৃষিপ্রযুক্তি দ্রুত সম্প্রসারণে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন এবং কৃষিপণ্য সাপ্লাই চেইনে সংশ্নিষ্ট সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এতে কৃষি উন্নয়ন আরও গতি পাবে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিএআরআই) পরিচালক (উদ্যানতত্ত্ব্) ড. আবেদা খাতুন বলেন, পরিমিত পানি ব্যবহারের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত ও আশানুরূপ ফলন উৎপাদনের লক্ষ্যে টেকসই, উন্নত ও লাভজনক, সেচ উদ্ভাবন নিয়ে বিএআরআই বহুদিন ধরে গবেষণা করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় অলটারনেট নালা সেচ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়। এ পদ্ধতিতে প্রায় ৩০-৩৫ ভাগ পানি সঞ্চয় হয়। তাই মুনাফা হয় তিন থেকে দশ ভাগ বেশি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক সমকালকে বলেন, 'পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। কিন্তু নানা কারণে পানি কমে যাচ্ছে। সারাবিশ্বেই পানির প্রাপ্যতা কমছে। এদিকে মনোযোগ দেওয়ার সময় এসেছে। সেচ ব্যবস্থা নিয়ে যদি কেউ কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে, তাকে স্বাগত জানানো হবে। তবে বিকল্প ফারো কিংবা সারি সেচ পদ্ধতি সম্পর্কে এখনও তিনি কিছু জানেন না বলেন তিনি। তবে পানির অপচয় কিংবা কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমাতে কেউ কোনো পদ্ধতি উদ্ভাবন করলে, সেটিকে অভিনন্দন জানানো হবে এবং কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।'
করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]
- চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল যাবে পাইপ লাইনে
- সোমবার আসছেন কাতারের আমির
- ক্যাশলেস পদ্ধতিতে যাচ্ছে এনবিআর
- বঙ্গবন্ধু টানেলে পুলিশ-নৌবাহিনী-ফায়ার সার্ভিসের টোল মওকুফ
- সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে আসছেন আরও ৪ লাখ মানুষ
- ৫০ বছরে দেশের সাফল্য চোখে পড়ার মতো
- জাত, দাম উৎপাদনের তারিখ লিখতেই হবে চালের বস্তায়
- প্রাণী ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাত এগিয়ে আসুক
- উপজেলা নির্বাচনে সিলেট বিএনপির ৬ নেতা
- উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপি’র আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ
- সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
- সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার আহ্বান বাংলাদেশ-নেপালের
- ভারতে ভোট শুরু আজ
- বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস চালু হতে যাচ্ছে- পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- ঢাকায় ভিসা কেন্দ্র খুলল চীন
- সামরিক ও ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার সম্পর্ক নিয়ে সেমিনার
- মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস-প্রধানমন্ত্রী
- ২৬১ বিজিপিকে শিগগিরই মিয়ানমারে পাঠানো হবে: বিজিবি ডিজি
- গুইমারায় প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
- খাগড়াছড়িতে ৫ দিনব্যাপী প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন
- রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের দাফন সম্পন্ন
- ফের আশা জাগাচ্ছে লালদিয়া চরের কনটেইনার টার্মিনাল
- মাঠ প্রশাসন সামলাতে হার্ডলাইনে সরকার
- ‘মাই লকারে’ স্মার্টযাত্রা
- এক সফটওয়্যারের আওতায় আসছেন সব সরকারি চাকরিজীবী
- জলবিদ্যুৎসহ নেপালের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান
- সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি: আট বিভাগে হচ্ছে মেলা
- শঙ্কা কেটে গিয়ে কৃষকদের মুখজুড়ে এখন স্বর্ণালি হাসি
- পর্যটন শিল্পের বিকাশ: কুয়াকাটায় বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ
- মুজিবনগর দিবসে সব অপশক্তিকে প্রতিহত করার অঙ্গীকার
- বিভেদ মেটাতে মাঠে আওয়ামী লীগ
- গুইমারায় প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
- খাগড়াছড়িতে আ.লীগ নেতার বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা
- বৃক্ষের প্রতি মানবপ্রেম জাগ্রত হোক
- মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
- অনিবন্ধিত ও অবৈধ নিউজ পোর্টাল বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে
- যত্রতত্র পার্কিং আর ফুটপাত দখলে সংকীর্ণ হচ্ছে খাগড়াছড়ির সড়ক
- উপজেলা নির্বাচনে সিলেট বিএনপির ৬ নেতা
- চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল যাবে পাইপ লাইনে
- এক সফটওয়্যারের আওতায় আসছেন সব সরকারি চাকরিজীবী
- মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- দীঘিনালায় যাত্রীর কাছ থেকে বেশী ভাড়া নেয়ায় জরিমানা
- খাগড়াছড়িতে ৪০জনের মনোনয়নপত্র বৈধ, একজনের বাতিল
- খাগড়াছড়িতে মাসব্যাপী ঈদ আনন্দ ও বৈশাখী মেলা শুরু
- বিমানের জরুরি অবতরণ: বেঁচে গেলেন শতাধিক যাত্রী
- রুমায় অস্ত্রসহ ৯ কেএনএফ সদস্য গ্রেফতার
- সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি: আট বিভাগে হচ্ছে মেলা
- উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ মন্ত্রী-এমপিদের
- এখনও আলোচনার পথ বন্ধ হয়নি, কেএনএফ প্রসঙ্গে র্যাবপ্রধান
- মাটিরাঙ্গায় অসহায়দের মাঝে বিজিবির অনুদান প্রধান