শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৪ ১৪৩০
|| ১৮ রমজান ১৪৪৫
দৈনিক খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর অন্ধকার নেমে আসে পুরো দেশজুড়ে। হত্যাকারীদের সুরক্ষার জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেন স্বঘোষিত সরকার প্রধান খন্দকার মোস্তাক। ষড়যন্ত্রকারীরা এভাবেই যুগে যুগে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে চিরতরে মুছে দেওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকেও বহুবার হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কিন্তু তিনি আল্লাহ’র অশেষ রহমতে বেঁচে গেছেন।
বেঈমান খন্দকার মোস্তাক যখন যেই সময়ে অঘোষিত সরকার প্রধান হিসেবে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেন, ঠিক ওই সময়ে সেনাপ্রধান ছিলেন বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাত্র ৯ দিনের মাথায় ১৯৭৫ সালের ২৪ আগস্ট সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন জিয়াউর রহমান। আর আর খন্দকার মোশতাক সরকার ছিল সম্পূর্ণভাবে সেনাসমর্থিত একটি ‘পুতুল সরকার’।
জিয়া ছিলেন মদতদাতা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে হত্যাকারীদের বিচার ও জবাবদিহিতা থেকে রক্ষা করার জন্য সেনাসমর্থিত সরকারের প্রধান হিসেবে খন্দকার মোস্তাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান থাকার সময় ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ‘অঘোষিত’ বা ‘স্বঘোষিত’ রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি জারি করেন। সুতরাং এর দায় এড়াতে পারেন না বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। সেদিন ‘দ্য বাংলাদেশ গেজেট, পাবলিশড বাই অথিউরিটি’তে লেখা অধ্যাদেশটিতে খন্দকার মোশতাকের স্বাক্ষর করেছিলেন। মোশতাকের স্বাক্ষরের পর অধ্যাদেশে তৎকালীন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এইচ রহমানের স্বাক্ষরও সংযুক্ত ছিল।
পরবর্তী সময়ে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা নিয়ন্ত্রকারী হিসেবে আবির্ভূত হন। ওই সময় বিচারপতি আবু সা’দাত মোহাম্মদ সায়েম রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি সায়েম জেনারেল জিয়াউর রহমানের কাছে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল সায়েম রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান এবং জিয়া রাষ্ট্রপতি হন।
খুনীদের লালন-পালন খন্দকার মোশতাকের জারি করা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বৈধতা দেওয়া না হলে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল সামরিক আইন প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গেই ১৫ আগস্টের খুনিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেত। জিয়াউর রহমানই ব্যবস্থা নিতে পারতো। কিন্তু জিয়াউর রহমান ব্যবস্থা নেওয়া দূরে থাক, ভবিষ্যতে কেউ যেন ব্যবস্থা না নিতে পারে পাকাপাকিভাবে সে ব্যবস্থাও করে দেন। ওই সময়ে একটি প্রচার ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, যেহেতু এই ইনডেমনিটি আইন সংবিধানের অংশ হয়ে গেছে তাই এই আইন আর পরিবর্তন হবে না। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পরও বিচারপতি আবদুস সাত্তার, এরশাদ এবং ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলেও ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি বাতিল বা রহিত করেননি কিংবা উদ্যোগও নেননি।
করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]
দৈনিক খাগড়াছড়ি Dainik Khagrachari
সর্বশেষ
জনপ্রিয়