শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৫ ১৪৩০
|| ১৮ রমজান ১৪৪৫
দৈনিক খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ২ অক্টোবর ২০১৯
ছবিঃ সংগৃহীত।
বর্তমান সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার অবস্থান গ্রহণের বিষয়টি বার বার সুস্পষ্ট করেছে দেশবাসীর সামনে। সর্বস্তরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ও পরোক্ষ কার্যক্রম পরিচালনার নীতিটিও যে সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে নিয়েছে সেটিও দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার। তবে সম্প্রতি দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে জোরালো অভিযান পরিচালিত হচ্ছে, তা যেন নজিরবিহীন। কেননা এটির যাত্রা শুরু শাসক দলেরই নিজ ঘরের মাধ্যমে। প্রথমে সরকারী দলের সমর্থনপুষ্ট ছাত্র সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এরপরই নিজ দলের যুব সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের দুর্নীতি হাতেনাতে ধরে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এই অভিযান তথা সরকারের এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এটা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, সরকারের উচ্চপর্যায়ের, আরও স্পষ্ট করে বললে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক সদিচ্ছা ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা থেকেই এই ইতিবাচক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নিজের দলের দুর্নীতিগ্রস্ত চক্রর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম থেকে এটা খুবই স্পষ্ট যে, সরকার জনতার কাছে দেয়া তার প্রতিশ্রুতিরই বাস্তবায়ন করে চলেছে। এর মধ্য দিয়ে স্পষ্টত বার্তা দেয়া হলো যে, ক্ষমতাসীন দল কাজে ও কথায় এক। দেশবাসীর কাছে প্রদত্ত অঙ্গীকার পালনে শতভাগ সচেষ্ট ও আন্তরিক। সেইসঙ্গে এটাও পরিষ্কার যে, দুর্নীতি যেই করুক তাকে তার অপরাধের শাস্তি পেতেই হবে। এখানে লুকোছাপা করা কিংবা ছাড় দেয়ার কিছু নেই। এই দৃঢ় উদ্যোগকে অনেকে শুদ্ধি অভিযান বলছেন। শুদ্ধতার জন্যই এ অভিযান, তাতে কোন সংশয় নেই। কিন্তু এর নেপথ্যের মূল অভিপ্রায় হলো দেশটাকে নতুন করে গড়া। যারা দেশের কল্যাণ চায় না, মানুষের কল্যাণ চায় না তারাই রাজনীতির নামে দুর্নীতি করে চলেছে। এদের না থামালে দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব হবে না।
নিউইয়র্কে প্রবাসীদের দেয়া সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা একদিকে যেমন গভীর তাৎপর্যবহ, অপরদিকে তাঁর সরকারের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনারও বার্তাবহ। দুর্নীতি না হলে দেশের চেহারা পাল্টে যেত, তাঁর এই অভিমতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। দেশের নামে কাজ করতে গিয়ে দুর্নীতিবাজরা একদিকে নিজেদের পকেট ভারি করেছে, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে অর্থনীতিকে দুর্বল করেছে, অন্যদিকে দেশের মানুষকে তার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করেছে। এসব মহাঅপরাধীর যথাযোগ্য শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে কেবল তাদের প্রাপ্য পরিশোধের জন্যই নয়, বরং সম্ভাব্য দুর্নীতিবাজদেরও শিক্ষা দেয়ার জন্য। দুর্নীতি করে পার পাওয়ার আর কোন সুযোগ নেই এখন এই দেশে এই বোধ গড়ে উঠলে এবং দুর্নীতিমুক্ত সংস্কৃতি সমাজে ও রাষ্ট্রে বেগবান হলে দেশের উন্নয়ন প্রতিবন্ধকতাহীনভাবে এগুবে। প্রধানমন্ত্রী বলিষ্ঠ ভঙ্গিতে সহজ ভাষায় পরিষ্কারভাবে প্রত্যেকের কাছে এ বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন যে, অসৎ কাউকে ছাড়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী খোলাখুলিই জানিয়েছেন, ব্যক্তির প্রকৃত উপার্জন কত আর তার জীবনধারা তথা জীবনযাপনের ব্যয় কেমন সেটি দেখা হবে। বলাবাহুল্য, এটি বিচার করলেই বোঝা যাবে ব্যক্তিটির অবৈধ আয় রয়েছে কিনা! যদি থাকে তাহলে তদন্তেই বের করে আনা সম্ভব ওই ব্যক্তিটি কোথায় কী পর্যায়ে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। আমরা তো চোখের সামনেই দেখছি স্বল্প বেতনভুক একজন কর্মচারী গাড়ি-বাড়ির মালিক বনে গেছেন। নিউইয়র্কে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী দ্ব্যর্থহীনকণ্ঠে বলেছেন, ১/১১’র মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তিররোধে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এর ফলে নিশ্চিতই দেশ ফিরবে সুনীতির পথে এবং সত্যিকারার্থেই সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। টেকসই উন্নয়ন হবে দেশের। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলার এই সক্রিয়তা এবার নিশ্চয়ই সুফল বয়ে আনবে।
করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]
দৈনিক খাগড়াছড়ি Dainik Khagrachari
সর্বশেষ
জনপ্রিয়