• বৃহস্পতিবার ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ১৩ ১৪৩০

  • || ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

দৈনিক খাগড়াছড়ি

প্রসীতদের সঙ্গ ত্যাগ করছেন ত্রিপুরা কর্মীরা!

দৈনিক খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২  

অনেক দিন থেকেই চলছিল গুঞ্জন। চলছিল চাপা ক্ষোভ। অবশেষে সেই ক্ষোভ থেকে বিস্ফোরণ। ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)- প্রসীতপন্থীদের গ্রুপে ভাঙনের সুর। না, কথাটি মিথ্যে নয়। দলটির মূল গ্রুপ থেকে এবার বেরিয়ে যাচ্ছে ত্রিপুরা বাহিনী। 
অভিযোগ উঠেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বেশির উপজাতীয় গোষ্ঠীতে চাকমাদের আধিপত্য। তাদের নিয়ন্ত্রণের কারণে অন্য গোষ্ঠীগুলো বিশেষ করে মারমা এবং ত্রিপুরার কর্মীরা একেবারেই কোণঠোসা। 
যদিও এসব পাহাড়ি গোষ্ঠীগুলোর মূল আয় অস্ত্রের মুখে মানুষকে জিম্মি করে চাঁদা নেওয়া। সব দলগুলোরই এই একজায়গায় অবাক করার মতো মিল। ইউপিডিএফ ছাড়াও জেএসএসের ভেতরেও জোর করে চাঁদা তুলে টাকা পয়সা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। 
এবার সেই চাঁদার ভাগ বাটোয়ারা এবং কম পাওয়া নিয়েই ইউপিডিএফের প্রসীতপন্থীদের গ্রুপ থেকে সশস্ত্র ত্রিপুরা কর্মীরা বেরিয়ে যাচ্ছে। গঠন করতে যাচ্ছে ত্রিপুরা ন্যাশনাল আর্মি। দলটির একাধিক নেতাও বিষয়টি নিশ্চিত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ সবখানে নানান ধরণের বক্তব্য দিচ্ছেন। আর তাতেই জানাজানি হয়ে গেছে ত্রিপুরারা আর থাকছেন না ইউপিডিএফে। শুধু ত্রিপুরার কর্মীরা নন, ইউপিডিএফ থেকে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মারমারাও। 
সবচেয়ে হাস্যকর বিষয় হচ্ছে, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)- প্রসীতপন্থীদের এই ভাঙনে ঘুরে ফিরে আবারও সেনাবাহিনীকে দায়ী করছে দলটি। যদিও এমন অভিযোগ অতীত থেকে এখনও চালু রয়েছে। কিছু হলেই ইউপিডিএফ, জেএসএস সবাই সেনাবাহিনীকেই দায়ী করে। 
ইউপিডিএফের প্রসীতের অস্ত্রধারীদের ভাষ্য, জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বকে ধ্বংস করতে সেনাবাহিনী মগ পার্টি ও বম পার্টির মতো আরেকটি দল গঠন করতে যাচ্ছে। এতে ত্রিপুরা গোষ্ঠী এবার যোগ দিয়েছেন। 
তবে তাদের এই কথায় ত্রিপুরার নেতারা বলেছেন, ইউপিডিএফে চাকমাদের দৌরাত্ম অনেক দিনের। তাদের কারণে আমরা কোণঠোসা। চাঁদার ভাগ বাটোয়ারা তুলে নিজেরাই নিয়ে নিচ্ছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে পাহাড়ে অশান্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে। 
পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউপিডিএফ এবং জেএসএসের দ্বন্দ্ব পুরোনো। আর এই দ্বন্দ্বের কারণে পাহাড়ে বসবাসরত বাঙালি-পাহাড়িরা সবসময় আতংকে। 
গত জুলাইয়ে পাহাড়ে কথিত পূর্ণ সায়ত্তশাসনের দাবিতে  প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) বন্ধুত্বে চিড় ধরার ব্যাপারটি ফের সামনে আসে জীবন ত্রিপুরা নামের এক ইউপিডিএফ কর্মী খুনের ঘটনায়। প্রতিক্রিয়ায় জেএসএসকে খুনোখুনি বন্ধ ও সমঝোতা রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেন ইউপিডিএফ। খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়ায় জীবন ত্রিপুরাকে সশস্ত্র হামলায় হত্যার ঘটনায় সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএসকে দায়ী করে ইউপিডিএফ। 
এ ব্যাপারে সংগঠনটির খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের সংগঠক ও কেন্দ্রীয় মুখপাত্র অংগ্য মারমা সন্তু লারমাকে খুনী বলে আখ্যায়িত করে তার বিচার দাবি করেন।
এই ঘটনায় দলটির উচ্চ পর্যায়ের নেতারা কোনো ধরণের ভূমিকা রাখতে না পারায় ক্ষুব্ধ হন ত্রিপুরা সমর্থকরা। তারা দলের নীতি নির্ধারকদের পদত্যাগ দাবি করে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। এই হুমকির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদার ভাগ না দেওয়া, চাকমাদের কাছে জিম্মি থাকার কথা জানিয়ে দেন। আর তাতেই ত্রিপুরাদের ক্ষোভ আরও বিস্ফোরিত হয়। 
 

করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]