বাংলাদেশকে ঘিরে সক্রিয় দেশি-বিদেশি চক্রান্ত
দৈনিক খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২৩
বিদেশের মাটিতে অবস্থান করে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীরা
ফিচার ডেস্ক
বৃটিশ শাসন থেকে শুরু করে পাকিস্তানের অব্যাহত শোষন-নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ১৯৭১ সালে একটি তর্জনীর ইশারায় মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বহু প্রাণের বিনিময়ে যুদ্ধে জয়লাভ করে স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়া এদেশ নিয়ে শুরু থেকেই ছিল নানা স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র। আন্তর্জাতিক বহু রক্তচক্ষু এবং অব্যাহত ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই আজকের এই অগ্রযাত্রায় পৌঁছেছে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। তবে এ উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার পেছনেও রয়েছে নানা অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের গল্প। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫২ বছরে এসেও এদেশকে নিয়ে থেমে নেই নানা স্বার্থান্বেষী মহলের অপপ্রচার। সংবিধান অনুয়ায়ী ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। এ লক্ষ্যে নিজেদের নানা প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশনসহ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু এ সময়টাকেই মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে দেশবিরোধী একটি শক্তি দেশের বাহিরে বসে নিয়মিতভাবেই দেশ, দেশের সরকার, সশস্ত্রবাহিনী ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে মিথ্যাচার। লক্ষ্য দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করা, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচাল করা ও এদেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করা।
দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করা, দেশে প্রতিষ্ঠিত শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেশকে অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্র করার অশুভ প্রয়াস নিয়ে এ চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিশালী চক্র। যুদ্ধাপরাধী ও আগুন সন্ত্রাসের সিন্ডিকেট দেশ-বিদেশে বসে বাংলাদেশবিরোধী এই ভয়ংকর অপতৎপরতায় নেমেছে। এ জন্য তারা বিশাল অর্থ ব্যয়ে ভাড়া করেছে সাইবার সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। তাদের কয়েকজন সেনানিবাসে অবাঞ্ছিত ও চাকরিচ্যুত সেনা কর্মকর্তা। কয়েকজন আছেন বিভিন্ন ফৌজদারি অপরাধের মামলায় আসামি হয়ে বিদেশে আত্মগোপন করা মুখোশধারী ও ভুঁইফোড় সাংবাদিক। এ সিন্ডিকেট প্রযুক্তির অপব্যবহার করে ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু পরিবার, সরকার, বিচার বিভাগ ও দেশের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। কোনো ধরনের জবাবদিহি না থাকায় বেপরোয়াভাবে প্রতিনিয়ত বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে আগুনসন্ত্রাসের এই সিন্ডিকেট।
মূলত বিভিন্ন সময়ে দেশে নানা ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে মামলার আসামী কিংবা দন্ডিত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে বিদেশে অবস্থান করা কতিপয় ব্যক্তি ও মহল এসব ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। যাদের মধ্যে রয়েছেন, জুলকারনায়েন সায়ের সামি, জ্যাকব মিল্টন, কর্নেল (অবঃ) শহীদ উদ্দিন খান, লে. কর্নেল (অব.) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, আব্দুর রব ভুট্টো, কথিত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন, কনক সারোয়ার, ও পিনাকী ভট্টাচার্য প্রমুখ।
এদের মধ্যে জুলকারনায়েন সায়ের সামি, আল জাজিরার সামি হিসেবেই বেশী পরিচিত। যে আপাদমস্তক অপরাধে মোড়া এক চরিত্র! কখনও তানভীর সাদাত, কখনও সায়ের জুলকারনাইন। আবার কখনও জুলকারনাইন সায়ের খান, এভাবে নাম বদলে প্রতারণাসহ অগণিত অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিটিই আল জাজিরা ফিল্মের মূল চরিত্র সামি। তাকে কেন্দ্র করেই আল জাজিরার তদন্ত টিম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনী নিয়ে ফিল্ম তৈরি করেছে।
পিতার ভুয়া নাম দিয়ে পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্সে করেন সামি। দুই যায়গায় তিনি পিতার নাম দিয়েছেন ওয়াসিট খান (Wasit Khan)। কিন্তু তার বাবার প্রকৃত নাম বাসিত খান (Basit Khan)। ক্যাডেট কলেজ থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর ভর্তি হয় কুমিল্লার ইস্পাহানি স্কুলে। ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়স থেকে ড্রাগ নেয়া, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাসহ নানা অভিযোগ ওঠে সামির বিরুদ্ধে। ১৭ বছর বয়সে ২০০০ সালের ৩০ জানুয়ারি ইসিবিতে কর্মরত মেজর ওয়াদুদের বিদেশ থেকে আনা ট্র্যাকস্যুট চুরি করে ধরা পড়েন। ২০০০ সালের জুলাই মাসে টাইগার অফিসার্স মেস থেকে হাতির দাঁত চুরি করে চট্টগ্রামের নিউমার্কেটে অঙ্গনা জুয়েলার্সে বিক্রি করেও ধরা পড়েন। বাবার চাকরির সুবাদে নিজেকে কখনও সেনাবাহিনীর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট, কখনও ক্যাপ্টেন হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিতেন। ২০০১ সালের ২৮ ও ২৯ এপ্রিল ঢাকা সেনানিবাসে নিজেকে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করে সামি। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বন্ধু উৎপলের কাছে নিজেকে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে প্রমাণের জন্য বেল্ট, বুট ও র্যাংক ইউনিফর্ম কেনেন। উৎপলের বাসা থেকেই সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে ট্যাক্সি ক্যাব দিয়ে সেনানিবাসসহ ঢাকার একটি পত্রিকা অফিস, রাপা প্লাজা, ধানমন্ডি ও চিড়িয়াখানা ঘুরে জাহাঙ্গীরগেট হয়ে সিএমএইচে প্রবেশের সময় দুপুর ২টায় মিলিটারি পুলিশের (এমপি) হাতে ধরা পড়ে সামি। এর ঠিক দু’দিন পর ২ মে বাবার অঙ্গীকারনামায় আর্মি এমপি ডেস্ক থেকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। ২০০৬ সালের ২০ জুলাই র্যাব কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে রাজধানীর ফার্মগেটের এজে টেলিকমিউনিকেশন থেকে ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার মোবাইল ফোন কিনে একটি ভুয়া চেক দেন। একইভাবে প্রাইজ ক্লাব নামক একটি কম্পিউটার ফার্ম থেকে ১০টি ল্যাপটপ কেনার কথা বলে, পরে চেক দিয়ে ২টি ল্যাপটপ নিয়ে আসে। চেক ডিজঅনার হলে অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১ তাকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনার পর তাকে সব সেনানিবাসে অবাঞ্ছিত করা হয়।
সেনা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিয়ে করেছিলেন সামি। এন্টেনা ভাঙ্গা ভি. এইচ .এফ (ওয়াকিটকি) নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেয়ার নামে কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা নেন। ব্যবসার কথা বলেও অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। নিজেকে সেনা সদস্য দাবী ও বহু লোকজনের সাথে প্রতারণা করে অর্থ আত্নসাৎ করে সামি এখন বিদেশে বসে স্বার্থান্বেষী মহলের ইশারায় দেশের বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র করে চলেছে।
জ্যাকব মিল্টন, সুদূর আমেরিকায় বসে দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনসাধারণকে দীর্ঘদিন ধরে ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছেন তিনি। ঢাকা সেনানিবাসে ঠিকাদারি করার সময় দুর্নীতির দায়ে অপসারিত হয়ে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে আমেরিকায় অবস্থান করছেন এই সাইবার অপরাধী। তিনি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি শাখার নেতা। নিউইয়র্কে একটি মর্টগেজ কোম্পানির নামে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রবাসীদের সর্বনাশ করে কয়েক বছর জেলেও ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে কানাডাভিত্তিক নাম সর্বস্ব একটি অনলাইন প্লাটফর্ম ‘নাগরিক টিভি’র মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে কুখ্যাতি অর্জন করেন এই জ্যাকব মিল্টন। আর তাকে রসদ দিচ্ছেন নাগরিকের দুই পরিচালক নাজমুস সাকিব ও টিটো রহমান। এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করেই তিনি একদিকে দেশের বিরুদ্ধে ধৃষ্টতা দেখিয়ে যাচ্ছেন, অন্যদিকে ফুলেফেঁপে উঠছেন অবৈধ অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে। বর্তমানে কানাডা থেকে 'নাগরিক টিভি'র নাজমুস সাকিব এবং টিটো রহমানের সাথে মিলে জ্যাকব মিল্টন ব্ল্যাকমেইলিং এবং চাঁদাবাজি করে যাচ্ছেন। এই অপরাধ চক্রের শিকার হয়েছেন দেশের সবচেয়ে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপও। গ্রুপটি থেকে ৬ লাখ মার্কিন ডলার হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলো চক্রটি। এর আগেও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে বিভিন্ন সময় ফেসবুক ও ইউটিউবে বিতর্কিত এবং মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর একাধিক প্রমাণ রয়েছে এ চক্রটির বিরুদ্ধে। তাদের অপপ্রচার থেকে বাদ যায় নি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, দেশের প্রধানমন্ত্রী, সাবেক ও বর্তমান সেনাপ্রধান, সাবেক পুলিশ প্রধানও।
সাজাপ্রাপ্ত হয়ে অবসরে যাওয়া আরেক সাইবার সন্ত্রাসী চাকরিচ্যুত লে. কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান। চাকরিচ্যুত হওয়ার পরও সেনাবাহিনীর নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে সেনাবাহিনীর পোশাক ও ব্যাজ পরা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেন। চাকরিকালীন বিভিন্ন অনিয়মের কারণে তার বিরুদ্ধে ২৮টি অভিযোগের চার্জ গঠন করা হয়। কোর্ট মার্শালে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়। এখন এই সাবেক কর্নেল দিনরাত পাকিস্তানপ্রেমীদের টাকায় বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনায় ব্যস্ত। কর্নেল শহীদের প্রতিটি কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ বিরোধী।
জানা গেছে, লে. কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. শহীদ উদ্দিন খান, ২০১০ সালের ৩০ মার্চ সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান। অবসর-পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালে উচ্চশিক্ষার অংশ হিসেবে সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নেন তিনি। এ সময় তিনি উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া শহীদ উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যবহার করে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকলাপকে প্রভাবিত করা ও স্বাভাবিক সরকারি দায়িত্ব পালনে ব্যাঘাত ঘটানোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। তিনি প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সদস্যদের বদলি, শাস্তি, চাকরি প্রদান, পদোন্নতি ইত্যাদি বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করতেন। বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে নিয়ে মনগড়া ও নেতিবাচক মন্তব্য করতেন। এসব কারণে ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর তাকে সব সেনানিবাসে অবাঞ্চিত করা হয়।
সেনাবাহিনীতে থাকাকালে ১৭ ইস্ট বেঙ্গলের অধিনায়ক হিসেবে ১৯ জুলাই ২০০১ থেকে ২৪ জানুয়ারি ২০০২ তারিখ পর্যন্ত কর্মরত থাকাকালীন অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপির পক্ষে প্রভাবিত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। নির্বাচনের আগে তিনি সামরিক নিয়মকানুন ভঙ্গ করে গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। তৎকালীন সময়ে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দীন, তৎকালীন চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন-অর-রশিদ এবং তার স্ত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপি নেতা সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়াসহ বিএনপি ঘরানার বিভিন্ন নেতা ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির সঙ্গে তার ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে তাদের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যোগাযোগ রাখেন তিনি।
শহীদ উদ্দিন খান সুইডেন প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক তাসনিম খলিলের কাছে একটি সাক্ষাৎকার দেন, যেখান থেকে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থা ও সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক ও মিথ্যা তথ্য তুলে ধরেন।
শহীদ উদ্দিন খান নিয়মিত ইউটিউব ও ফেসবুকে পোস্ট এবং ভিডিও প্রকাশ করেন। যেখানে তিনি সরকার সম্পর্কে বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্য করেন, যা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। অফিসার থাকার সময় ইউনিটে ছুটি ব্যতীত অনুপস্থিত থাকার অপরাধে জিওসি ৩৩ পদাতিক ডিভিশন কর্তৃক তার তিন মাসের জ্যেষ্ঠতা হরণ করা হয়। ২০০২ সালের ১৫ মার্চ জাতিসংঘ মিশন মনুস্ক কঙ্গোতে যান তিনি। ২ মাস পর মিথ্যা শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে মিশন হতে নাম প্রত্যাহার করে দেশে আসেন। অধিনায়ক হিসেবে ৩০ রাইফেল ব্যাটালিয়নে বদলী হন। পরবর্তীতে, তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৬ রাইফেল ব্যাটালিয়নে আন্তঃ বদলি করা হয়। ৬ রাইফেল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক হিসেবে কর্মরত থাকাকলীন তার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধ কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছিল। এ ছাড়া বেশ কিছু অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত আদালত গঠন করা হয়। ২০০৪ সালের ২৮ নভেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিডিআর সদর দফতর পিলখানা ঢাকায় একটি সামরিক কোর্ট মার্শাল অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে শহীদ উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে ২৮টি অভিযোগ দাখিল করা হয়। ২৮টির মধ্যে ২১ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০০৫ সালের ৩১ মে কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে চাকরিচ্যুত করা হয়।
সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা ১৯৮৯ সালের ৯ আগস্ট সিলেট রেলস্টেশনে ট্রেনচালকের কলার ধরে অশোভন আচরণ করায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ২০২১ সালের ২০ জানুয়রি পুলিশের সিটিটিসির একটি দল তার বাসা থেকে জাল টাকা, অস্ত্র ও গোলাবারুদ, জিহাদি ও জঙ্গি সম্পর্কিত বই উদ্ধার করে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশে আসেন।
ইংল্যান্ডের জাতীয় দৈনিক দ্য সানডে টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ত্র ব্যবসা ও জঙ্গিবাদ-সংক্রান্ত মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি শহীদ উদ্দিন বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ইংল্যান্ডের টোরি পার্টির ফান্ডে ২০ হাজার পাউন্ড অনুদান দিয়েছেন। তার ঢাকার বাসায় অভিযান চালিয়ে জিহাদি বই, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে বাংলাদেশের কাউন্টার টেররিজম পুলিশ। ২০০৯ সাল থেকে ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে বসবাস করছেন তিনি। সেখানে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের বসবাস নিশ্চিত করতে কিনেছেন মাল্টি মিলিয়ন পাউন্ডের ‘গোল্ডেন ভিসা’। বাংলাদেশ পুলিশ বলছে, শহীদ উদ্দিন খানের ঢাকার বাড়িতে তারা বিস্ফোরক, অস্ত্র, আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উগ্রবাদী বইপত্র এবং বাংলাদেশি জাল মুদ্রার সন্ধান পেয়েছে। তারা আরও বলেছে, শহীদ উদ্দিনের নামে ৫৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে। এ বিষয়টিও পুলিশ উদঘাটন করেছে। এসব অ্যাকাউন্ট অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের বিষয়টি প্রমাণ করে।
রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ড পরিচালনাকারী বরখাস্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান দেশে ও বিদেশে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় বাহিনী সম্পর্কে নানাবিধ অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান নিয়মিত বেশ কয়েকটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচার চালাচ্ছেন এবং বিভিন্ন ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে অত্যন্ত আপত্তিকর মন্তব্য করছেন। জনপ্রিয়তা অর্জনের হীন উদ্দেশ্য নিয়ে একজন নিখুঁত বখাটে মুস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট গল্প প্রকাশ করছেন। তার ক্রমাগত প্রচারের লক্ষ্য মূলত বাংলাদেশ, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা। সুশীল সমাজের সদস্য হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার এজেন্ডা নিয়ে মুস্তাফিজুর রহমান নিজেকে একজন “বঞ্চিত অফিসার হিসেবে তুলে ধরেন এবং ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা, সস্তা ও মিথ্যা অপপ্রচারের গল্প ছড়ান।”
আব্দুর রব ভুট্টো, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী এ ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে 'কটূক্তিমূলক এবং রাষ্ট্রবিরোধী' উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ার জন্য বহুল পরিচিত। অর্থের লোভে দেশবিরোধী চক্রের হোতা আব্দুর রব ভুট্টোর প্রতিদিন ফেসবুক-ইউটিউবে লাইভে এসে ছড়াচ্ছেন নানা রকমের গুজব। দেশের বাইরে থেকে ফেসবুক ও ইউটিউবে “লন্ডন বাংলা চ্যানেল” নামে একটি পেইজ ও চ্যানেল থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপিকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নানা ধরণের মিথ্যা ও অসত্য তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালান আবদুর রব ভুট্টো। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে ।
ইলিয়াস হোসাইন, গুজব প্রচারকারী কথিত এক সাংবাদিক। একুশে টেলিভিশনে কাজ করা অবস্থায় চাকরি দেওয়ার নাম করে গ্রামের দুই যুবককে ঢাকাতে এনে ইলিয়াস তাদের স্বর্বস্ব লুট করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ টাকার ভাগাভাগি নিয়ে আ. রব ভূট্টো ও সমালোচিত সাংবাদিক ইলিয়াসের মধ্যকার ঝামেলার পর যুক্তরাষ্ট্রে মহিলা দলের নীরা রাব্বানির দায়েরকৃত চুরি ও নারী নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো সাংবাদিক ইলিয়াসকে।
কিছুদিন আগেই, চট্টগ্রামের আলোচিত মিতু হত্যা মামলার মোড় অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে একটি মনগড়া তথ্যচিত্র উপন্থাপন করার পর তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করে পিবিআই। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আমেরিকা প্রবাসী হলুদ সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গায়। তার বাবা ছিলেন ১৯৭১ সালে রাজাকার। পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী। নিজেকে বুক ফুলিয়ে রাজাকারের সন্তান দাবি করা ইলিয়াসের মূল কাজ মিথ্যাকে মিষ্টি মিষ্টি কথায় সত্য বানানো। বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণার নীল নকশার অংশীদার তিনি। দেশে সাংবাদিকতা করার সময় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির একাধিক অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছিল। বিদেশে বসে সাইবার স্পেস ব্যবহার করে সবাইকে নীতি-নৈতিকতার জ্ঞান দিয়ে থাকেন। ইলিয়াস হোসেন বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্বেষ ও সামাজিক অস্থিরতা ছড়ানোর কারণে সম্প্রতি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তার পেজ ব্লক করে দেয়। তিনি নতুন করে পেজ খুলে আবার অপতৎপরতা শুরু করেছেন।
এক ডজন শীর্ষ সাইবার অপরাধীর মধ্যে তালিকার শীর্ষে আছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বাসিন্দা নেত্র নিউজের এডিটর ইন চিফ ও সুইডেন প্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিলের নাম। তিনি নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের সহযোগী হিসেবে তিনি ২০০০ সালে ডেইলি স্টারে সাব-এডিটর পদে যোগ দেন। ২০০৭ সালে ডেইলি স্টারের চাকরি চলে যাওয়ার পর তিনি মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিতে থাকেন। সরকারবিরোধী লেখার কারণে তাসনিম খলিলের দায়িত্বে বের হওয়া ‘ফোরাম ম্যাগাজিন’ নামে ম্যাগাজিনের একটি সংখ্যা বাজার থেকে তুলে নেয় ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষ। তিনি নিজস্ব ‘তাসনিম খলিল ব্লগ’-এ সরকার, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে টানা বিষোদগার করেন। ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক উসকানি ছড়ানোর অভিযোগে ২০০৭ সালের ১১ মে তাসমিন খলিলকে ধানমন্ডির বাসা থেকে আটক করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। তার বাসায় অভিযান চালিয়ে কম্পিউটার, টেলিফোনসহ বিভিন্ন নথিপত্র জব্দ করে। এক মাস আত্মগোপনে থেকে ২০০৭ সালের ৬ জুন দেশ ত্যাগ করেন তাসনিম খলিল। রাজনৈতিক আশ্রয় নেন সুইডেনে। সেখানে গিয়ে তিনি ‘অষ্টকলাম নিউজ’ নামে একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হন।
দেশে ও বিদেশে অবস্থান করে তাসনিম খলিল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে রাষ্ট্র, সরকার ও সেনবাহিনী নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও কয়েকটি দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তাদের ব্যক্তিগত ই-মেইলে ও মোবাইলে দেশবিরোধী তথ্য পাচার করেন।
তাসনিম খলিল বাংলাদেশবিরোধী শক্তি ডেভিড বার্গম্যানের দোসর। আলজাজিরা টেলিভিশনে প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান’ ষড়যন্ত্রের নেপথ্য কুশীলব এই তাসনিম খলিল। নানা কৌশলে সাইবার দুনিয়ায় বাংলাদেশবিরোধী চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছেন খলনায়ক খলিল। ‘নেত্র নিউ’ নামে তার প্রতিষ্ঠানের রোজকার কাজ বঙ্গবন্ধু পরিবার, রাষ্ট্র ও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার।
কানাডা প্রবাসী সাবেক সেনা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন। ২০২০ সালের ২০ আগস্ট তাকে সেনানিবাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। তিনি বর্তমানে বিএনপি-জামায়াতের পেইড এজেন্ট হয়ে তাদের গুজব সেলের একজন শীর্ষ সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। এ কারণে তিনি দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্র, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও সরকার নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব, অপপ্রচার চালিয়ে আসছেন। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে প্রচলিত আইন ও সেনাশৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে মামলা রয়েছে।
মেজর দেলোয়ার হোসেন (অব.) কানাডায় অবস্থান করে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্য করে থাকেন। পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর সিনহা (অব.) হত্যাকে কেন্দ্র করে দেলোয়ার তার ফেসবুক পেজে সেনাবাহিনীসহ সরকার সম্পর্কে বিভিন্ন উসকানিমূলক পোস্ট করেন।
এ ছাড়া দেলোয়ার সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সামরিক পোশাক পরিহিত ছবি এবং সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট রাজনীতিবিদকে উদ্দেশ্য করে সেনাবাহিনী ও সরকারবিরোধী নেতিবাচক পোস্ট শেয়ার করেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ১০ আগস্ট ২০২০ তারিখে সেনানিবাস এবং সেনানিবাসের আওতাভুক্ত এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
রাজনৈতিক ও সামাজিক উসকানি এবং বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তার বেশ কয়েটি আইডি ডিঅ্যাক্টিভ করে দিয়েছে।
কানাডা প্রবাসী ক্রিমিনাল, কালপ্রিট ও সাইবার সন্ত্রাসীদের সংঘবদ্ধ চক্রের মাস্টারমাইন্ড সাংবাদিক নামধারী টিটো রহমান। তার পুরো নাম মোস্তাফিজুর রহমান টিটু ওরফে টিটো রহমান। দিনাজপুর পৌরসভার ইটগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা টিটো রহমান ২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার আসামি। প্রবাসে থেকে ইউটিউব ও ফেসবুকভিত্তিক পেজ খুলে চালিয়ে যাচ্ছেন সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড। সহজে জনপ্রিয়তা পেতে তিনি সরকারবিরোধী চক্রকে সঙ্গে নিয়ে দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নানা গুজব, মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার চালান।
কথিত এই ভুয়া সাংবাদিক টিটোর প্রধান উদ্দেশ্য দেশকে ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে বহির্বিশ্বে প্রমাণ করা। দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে আগুনসন্ত্রাসের দোসরদের সঙ্গে নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যাওয়া। এ জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বাধীনতা বিরোধীদের দোসর হিসেবে প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ২০১৮ সালে সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়ার মাস্টারমাইন্ড এই টিটো। তার বিরুদ্ধে প্রবাসে বসে ব্ল্যাকমেলিং ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক এপিএস মোহাম্মদ শামসুল আলম সরকারও রাষ্ট্রবিরোধী অপতৎপরতার সমন্বয় করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসে শামসুল আলম সাইবার শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সংগঠিত করার পাশাপাশি নিজেও নিয়মিত মিথ্যাচার করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে। শামসুল আলমের বিরুদ্ধে সাইবার আইনে বাংলাদেশে কমপক্ষে ১০টি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থানার দাসেরজঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী ও আজুফা খাতুনের ছেলে শামসুল আলম।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস থাকার সময় তিনি নিয়োগ, বদলি বাণিজ্য, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন লোভনীয় ফাইল নানা কৌশলে আটকে অর্থ আদায় করেন। রাতারাতি গাড়ি-বাড়ির মালিক বনে যান। ৮৬ ব্যাচের ক্যাডার কর্মকর্তা শামসুল আলমের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলাও করে দুদক। দুর্নীতির মাধ্যমে পাওয়া অর্থ বিদেশে পাচার করে এখন সেখানে বসে সরকারের বিরুদ্ধে নানা বিষোদগার করছেন শামসুল আলম।
কানাডা প্রবাসী ও ছাত্রশিবিরের ক্যাডার নাজমুস সাকিব। কানাডায় বসে যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ন্ত্রিত ইউটিউব চ্যানেলে দিনরাত মিথ্যাচার করেন তিনি। তারেক জিয়ার ক্যাডার পরিচয় দেওয়া নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। বঙ্গবন্ধু পরিবারকে টার্গেট করে অপতৎপরতা ছড়ানোই তার লক্ষ্য। জানা গেছে, নিউইয়র্ক ও লন্ডনে জামায়াতের যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর রেখে যাওয়া অর্থ নাজমুস সাকিবকে পাঠানো হয় প্রতি মাসে। এই টাকা দিয়ে নাজমুস সাকিব গং নাগরিক টিভি নামের একটি আইপি টিভি খুলে সরকারবিরোধী প্রচারণা পরিচালনা করছে।
কানাডা প্রবাসী এবং ভুঁইফোড় অনলাইন নাগরিক টিভির আরেক বক্তা এম রহমান মাসুম। নাজমুস সাকিব ও টিটো রহমানের সঙ্গে জুটি বেঁধে সরকারবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত। ব্যারিস্টার পরিচয় দেওয়া এম রহমান মাসুম সারা দেশে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার আসামি। কানাডা প্রবাসী মাসুম সাইবার সন্ত্রাসীদের সংঘবদ্ধ চক্রের একজন। বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতায় গভীরভাবে জড়িয়ে রয়েছে তার নাম।
পর্নোগ্রাফি মামলার আসামি হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যাওয়া সাংবাদিক কনক সরওয়ার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন টকশোতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে উসকে দেওয়া, সরকারবিরোধী প্রপাগাণ্ডা, বাংলাদেশের ইতিহাসকে বিকৃতি করা তার প্রধান কাজ। বেসরকারি একুশে টিভিতে কর্মরত অবস্থায় ২০১৫ সালে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় জেল খাটেন কনক সরওয়ার। তার অপতৎপরতায় একুশে টেলিভিশন ধ্বংসের মুখে পড়ে। বিদেশে বসে সরকার পতনের স্বপ্ন দেখাই এখন কনক সরওয়ারের মূল কাজ। তার গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলায়। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসে ইলিয়াস হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন।
সম্প্রতি একজন বিএনপি নেতার কাছ থেকে অর্থ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীপুত্র ও সরকারের বিরুদ্ধে ভিডিও বানানো নিয়ে অর্থ লেনদেনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে ভিডিও বানানোর খরচের নামে কনককে চাঁদাবাজি করতে শোনা যায়। ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে কনক সরওয়ারের দেশবিরোধী ভিডিও কনটেন্ট ব্লক করার জন্য স্বরাষ্ট্র সচিব ও বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন।
গাজী টিভি থেকে চাকরিচ্যুত লন্ডন প্রবাসী প্রতারক সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর, যার বাবা আবু মোশারফ হোসেন পরিবার পরিকল্পনা অফিস থেকে চুরির দায়ে চাকরিচ্যুত হয়ে জেল খাটেন ছয় মাস। জাওয়াদের বিরুদ্ধে আছে ধর্ষণের মামলা। জাওয়াদ নির্ঝর করাপশন ইন মিডিয়া নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলে বিশিষ্ট সাংবাদিক, সম্পাদকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে চাকরিচ্যুত একটি চক্র।
পিনাকী ভট্টাচার্য অসৎ, অসাধু এবং একজন ভয়ংকর সাইবার সন্ত্রাসীর নাম। যিনি বিদেশের মাটিতে বসে বাংলাদেশ এবং সরকার বিরোধী অপপ্রচার চালান। পাশাপাশি স্বাধীনতা বিরোধীদের উপজীব্য করে বলয় গড়ে তুলেছেন দেশের মুক্তবুদ্ধির চর্চা ও সুষ্ঠু গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে।
ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়া এই পিনাকী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান দেশ থেকে। যাওয়ার আগে তিনি নিজেই গুম হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে বিভিন্ন প্রপাগান্ডা ছড়ান।
পিনাকী ভট্টাচার্য ধর্মীয় উসকানি ছড়াতে ইউটিউবে তার নিজ চ্যানেলে সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিধান নিয়ে কট্টর সমালোচনা করেন যেন হিযবুত তাহরীর, আল-কায়েদা ও আইএসআইএসের মতো উগ্রবাদের পক্ষে সমর্থন পাওয়া যায়। ফ্রান্সে বসে স্বাধীনতা বিরোধীদের টাকায় বাংলাদেশের কৃষ্টি-কালচার, সরকার, সেনাবাহিনী, বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে যাচ্ছেন। অপচেষ্টা করছেন দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীতের মতো বিষয়গুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করার।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের বিপক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন এই পিনাকী। আইনের সমালোচনার পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় নিয়ে বিদ্রুপ করে আদালত অবমাননা করেছেন বহুবার। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নামে গুজব ছড়িয়ে স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিশু-কিশোরদের উসকানি দিয়ে তাদের জীবন হুমকির মুখে ফেলেছিলেন এই পিনাকী।
বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে তলব করে। এরপরই তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে চলে যান। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি অবস্থায় তিনি গোপনে সীমান্ত পার হয়ে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ব্যাংকক যান এবং সেখানে কিছুদিন অবস্থান করে ফ্রান্সে পালিয়ে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।
ভদ্রবেশি এই সাইবার সন্ত্রাসীর নামে ঢাকায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। মামলায় পিনাকীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চক্রান্তে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে ক্ষমতায় আনতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার ছড়াচ্ছেন পিনাকী।
মূলত, স্বাধীনতার পর একের পর এক ব্যর্থ সরকার দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনার প্রেক্ষিতে এদেশ যখন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ভাবে অবক্ষয়ের দিয়ে ধাবিত হয় তখনই এ রাষ্ট্রের কল্যানে হাল ধরে বর্তমান সরকার। নানা চরাই-উৎরাই পেরিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মধ্য দিয়ে এদেশ পৌঁছে যায় উন্নয়নশীল দেশের কাঁতারে। উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এ দেশ এখন এশিয়া উদীয়মান তারকা। এসব অগ্রযাত্রায় ইর্ষান্বিত হয়ে একটি ব্যর্থ শক্তি বারবার এদেশের কলিজায় আঘাত করার চেষ্টা করেছে। দেশ, দেশের সরকার প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী, গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কথিত বুদ্ধিজীবির বেঁশে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন দিনের পর দিন।
সংশ্লিষ্টারা মনে করেন, দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সবার আগে এসব অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। রাষ্ট্রের ও জনগণের কল্যানে দেশী-বিদেশী এসব চক্রান্ত প্রতিহত করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মানে এগিয়ে যাওয়া এখন সময়ের দাবি।
করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]
- চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল যাবে পাইপ লাইনে
- সোমবার আসছেন কাতারের আমির
- ক্যাশলেস পদ্ধতিতে যাচ্ছে এনবিআর
- বঙ্গবন্ধু টানেলে পুলিশ-নৌবাহিনী-ফায়ার সার্ভিসের টোল মওকুফ
- সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে আসছেন আরও ৪ লাখ মানুষ
- ৫০ বছরে দেশের সাফল্য চোখে পড়ার মতো
- জাত, দাম উৎপাদনের তারিখ লিখতেই হবে চালের বস্তায়
- প্রাণী ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাত এগিয়ে আসুক
- উপজেলা নির্বাচনে সিলেট বিএনপির ৬ নেতা
- উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপি’র আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ
- সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
- সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার আহ্বান বাংলাদেশ-নেপালের
- ভারতে ভোট শুরু আজ
- বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস চালু হতে যাচ্ছে- পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- ঢাকায় ভিসা কেন্দ্র খুলল চীন
- সামরিক ও ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার সম্পর্ক নিয়ে সেমিনার
- মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস-প্রধানমন্ত্রী
- ২৬১ বিজিপিকে শিগগিরই মিয়ানমারে পাঠানো হবে: বিজিবি ডিজি
- গুইমারায় প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
- খাগড়াছড়িতে ৫ দিনব্যাপী প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন
- রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের দাফন সম্পন্ন
- ফের আশা জাগাচ্ছে লালদিয়া চরের কনটেইনার টার্মিনাল
- মাঠ প্রশাসন সামলাতে হার্ডলাইনে সরকার
- ‘মাই লকারে’ স্মার্টযাত্রা
- এক সফটওয়্যারের আওতায় আসছেন সব সরকারি চাকরিজীবী
- জলবিদ্যুৎসহ নেপালের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান
- সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি: আট বিভাগে হচ্ছে মেলা
- শঙ্কা কেটে গিয়ে কৃষকদের মুখজুড়ে এখন স্বর্ণালি হাসি
- পর্যটন শিল্পের বিকাশ: কুয়াকাটায় বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ
- মুজিবনগর দিবসে সব অপশক্তিকে প্রতিহত করার অঙ্গীকার
- বিভেদ মেটাতে মাঠে আওয়ামী লীগ
- গুইমারায় প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
- খাগড়াছড়িতে আ.লীগ নেতার বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা
- বৃক্ষের প্রতি মানবপ্রেম জাগ্রত হোক
- অনিবন্ধিত ও অবৈধ নিউজ পোর্টাল বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে
- মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
- যত্রতত্র পার্কিং আর ফুটপাত দখলে সংকীর্ণ হচ্ছে খাগড়াছড়ির সড়ক
- উপজেলা নির্বাচনে সিলেট বিএনপির ৬ নেতা
- মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- এক সফটওয়্যারের আওতায় আসছেন সব সরকারি চাকরিজীবী
- দীঘিনালায় যাত্রীর কাছ থেকে বেশী ভাড়া নেয়ায় জরিমানা
- খাগড়াছড়িতে ৪০জনের মনোনয়নপত্র বৈধ, একজনের বাতিল
- খাগড়াছড়িতে মাসব্যাপী ঈদ আনন্দ ও বৈশাখী মেলা শুরু
- রুমায় অস্ত্রসহ ৯ কেএনএফ সদস্য গ্রেফতার
- বিমানের জরুরি অবতরণ: বেঁচে গেলেন শতাধিক যাত্রী
- উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ মন্ত্রী-এমপিদের
- মাটিরাঙ্গায় অসহায়দের মাঝে বিজিবির অনুদান প্রধান
- উপজেলায় নির্বাচন: প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপি-জামায়াত নেতারাও
- মাটিরাঙ্গায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম উদ্বোধন
- প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব ও গাম্বিয়া সফর বাতিল