বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৪ ১৪৩০
|| ১৭ রমজান ১৪৪৫
দৈনিক খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ৩ এপ্রিল ২০২২
১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধাদের উপহার স্বরূপ প্রথম সরকারি চাকরীতে কোটা ব্যবস্থা চালু করেন। আমাদের স্বাধীন্তার জন্য জীবন বাজি রেখে সম্মুখ সমরে অংশ নেওয়া জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জন্য কোটা ব্যবস্থা চালু করাটা ছিল অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত।
রাজনীতির বিভিন্ন পালাবদলের হাওয়ায় ১৯৮৫ সালে উপজাতিরা সরকারি চাকরী ও উচ্চশিক্ষা এবং মেডিক্যালে ৫ শতাংশ কোটা সুবিধা পায়।
২০১৮ সালে ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনে সায় দিয়ে নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা ও তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহান জাতীয় সংসদে ১ম শ্রেণীর চাকরিতে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। এতে তিনি সারা বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর কাছাকাছি সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের গ্রহণযোগ্যতা ও যৌক্তিকতা নিয়ে কারো মনে সংশয় ছিল না। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ( যারা বিভিন্ন সময় নিজেদের অযৌক্তিকভাবে আদিবাসী দাবি করে ) সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নানান রকম মানব বন্ধন ও মিছিল সমাবেশ করে।
নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোটা ব্যবস্থার কোন প্রয়োজনীয়তাই নাই। ৭১ এর যুদ্ধবিধস্ত বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। গ্রাম ও শহর বলতে আলাদা কিছু নেই। যা পার্থক্য তা কেবল উঁচু উঁচু বিল্ডিং আর যানবাহন ও শিল্প কলকারখানার আধিক্যে। গ্রাম ও শহরের মানুষ একই গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। শিক্ষা গ্রহনের মধ্যে শহর ও গ্রাম এখন একই লাইনে সমান্তরালে চলছে। চরাঞ্চল কিংবা পাহাড় বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি এমন একটি জায়গাও এখন বাংলাদেশে নেই। যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এসেছে।
পিছিয়ে নেই এক সময়কার ভয়ংকর ও দুর্গম পার্বত্য চট্টগ্রাম। তিন পার্বত্য জেলায় গঠিত ৩টি বিশেষ জেলা পরিষদ থেকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে ১ম শ্রেণী ব্যতিত অন্য সকল চাকরীর নিয়োগ প্রত্যাশীদের। আবার এই জেলা পরিষদগুলোর চেয়ারম্যান ও সংখ্যা গরিষ্ঠ সদস্য সবাই উপজাতি। কোটা ছাড়াও আরও বিভিন্ন রকম সুবিধা পাচ্ছে উপজাতিরা। এর ফলে তাদের পরিবারে স্বচ্চলতা এসেছে। শিক্ষার হার বাড়ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মান সম্মত এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো শহুরে শিক্ষার্থীদের মতো সমান গতিতে তারা এগিয়ে যাচ্ছে।
সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হওয়ার আকাঙ্কা আমাদের চিরাচরিত। আর এই ক্ষেত্রে প্রধান মাধ্যম হলো শিক্ষার সমান সুযোগ। যা শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম নয়, দেশের প্রতিটি অঞ্চলে সরকার বিস্তৃত করেছে। শিক্ষার সমান সুযোগ থাকার পরেও সরকারি চাকরীতে কোটা দাবি করা অযৌক্তিক ও নিন্দনীয়। বরং সময় এসেছে উচ্চশিক্ষা ও মেডিক্যালে বিদ্যমান উপজাতি কোটাসহ সকল প্রকার কোটা নিয়ে নতুনভাবে ভাবার।
করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]
দৈনিক খাগড়াছড়ি Dainik Khagrachari
সর্বশেষ
জনপ্রিয়