বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রতিকৃতি
দৈনিক খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০২২
ছবি- সংগৃহীত।
অসাম্প্রদায়িকতাই ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দর্শনের মূল ভিত্তি। তিনি ছোটবেলা থেকেই অসাম্প্রদায়িক ছিলেন। স্কুল জীবন থেকেই তিনি বন্ধু-বান্ধবের সাথে যে আচরণ করতেন তা ছিল সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক। নিজে মুসলিম লীগের একজন সদস্য হয়েও অন্য কোনো দলের প্রতি তার বিদ্বেষ ছিল না।
কলকাতায় অধ্যয়নরত অবস্থায় ১৯৪৬ সালে যখন হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা হয়েছিল, তখন তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে দাঙ্গা বিরোধী তৎপরতায় নিয়োজিত ছিলেন এবং হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের লোককে নিরাপদে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। তাছাড়া তখন শেরে বাংলা, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে যে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি এদেশে গড়ে উঠেছিল তিনি ছিলেন তার একজন সমর্থক।
১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবে ভারত বিভাগের পর স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের যে রূপরেখা কল্পনা করা হয়েছিল সেখানে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে তারা ভারত বিভক্তের সমর্থন করেননি। তাই বঙ্গভঙ্গের আন্দোলনে তারা বিরোধী ছিলেন। যা হোক, পাকিস্তান সৃষ্টির পর বেশ কিছুটা মনোক্ষুণ্ন হয়ে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে প্রবেশ করেন এবং ঐ স্বাধীনতা যে বাঙালির জন্য নয় তা তিনি তার নিকটজনের কাছে বলা শুরু করেন।
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে প্রবেশ করে মুসলিম লীগের রাজনীতি পরিবর্জনের লক্ষ্যে মুসলিম লীগকে আওয়ামী মুসলিম লীগ ও পরে আওয়ামী লীগে পরিবর্তন করেন। এই পরিবর্তনের লক্ষ্য ছিল মুসলিম লীগকে একটা অসাম্প্রদায়িক দলে পরিণত করা।
বঙ্গবন্ধু মনে করতেন ধর্মভিত্তিক দ্বি-জাতি তত্ত্বের উপর ভারত বিভক্ত হলে সাম্প্রদায়িকতার কারণে পরহিংসা ও পরস্পরের বিরোধ অব্যাহত থাকবে। বাস্তবে তাই সত্য হলো।
১৯৪৭ সালের পর থেকে পাকিস্তান-ভারতে যেসব দাঙ্গা হয়েছে তাতে কয়েক লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন, কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে, চরম অশান্তির সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে প্রবেশ করে মুসলিম লীগের রাজনীতি পরিবর্জনের লক্ষ্যে মুসলিম লীগকে আওয়ামী মুসলিম লীগ ও পরে আওয়ামী লীগে পরিবর্তন করেন। এই পরিবর্তনের লক্ষ্য ছিল মুসলিম লীগকে একটা অসাম্প্রদায়িক দলে পরিণত করা।
আওয়ামী লীগের ভেতর প্রগতিশীল চিন্তার লোকদের নিয়ে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে অসাম্প্রদায়িক দল সৃষ্টি করেন। তবে বঙ্গবন্ধু একজন খাঁটি মুসলমান ছিলেন। ইসলামের প্রতি তার ছিল পরম অনুরাগ। এটা প্রমাণিত হয় বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যেভাবে তিনি ইসলাম ধর্মের উন্নতি সাধন করেন তা দেখে, কিন্তু মুসলমান হলেও তার জাতীয়তাবাদী চেতনা এত প্রখর ছিল, সেখানে সাম্প্রদায়িকতা বা ধর্মের কোনো সংঘাত ছিল না।
তিনি নিজে একজন বাঙালি বলে গৌরবান্বিত ছিলেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা সমৃদ্ধ শেখ মুজিব বাংলার ৪টি প্রধান সম্প্রদায় হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সকলকেই সমদৃষ্টিতে দেখতেন। ধর্মীয় কারণে তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হয়নি। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অমর্ত্য সেনের ভাষায়, বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িকতা পাশ্চাত্য ধারণার মতো ধর্ম বিবর্জিত ছিল না। প্রত্যেক ধর্মের প্রতি ছিল তার শ্রদ্ধা।
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ধর্ম নিরপেক্ষতা হলো প্রত্যেকের স্ব-স্ব ধর্ম পালন করার অধিকার। রাষ্ট্রের ব্যাপারে ধর্ম কোনো হস্তক্ষেপ করবে না, আর ধর্মের ব্যাপারে রাষ্ট্র থাকবে নির্লিপ্ত। সকলকে তিনি বাঙালি হিসেবে দেখতেন।
বাঙালি সংস্কৃতির ভেতর ছিল তার গভীর অনুরাগ। তিনি প্রত্যেক ধর্মীয় অনুষ্ঠানের প্রতি ছিলেন শ্রদ্ধাশীল। তার ধারণা ছিল হিন্দুর মন্দির, মুসলমানের মসজিদ, খ্রিষ্টানের গির্জা, বৌদ্ধের প্যাগোডা পাশাপাশি থেকে স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করবে। ধর্মীয় বিরোধের কারণে পরস্পর সংঘাতে লিপ্ত হবে না।
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ধর্ম নিরপেক্ষতা হলো প্রত্যেকের স্ব-স্ব ধর্ম পালন করার অধিকার। রাষ্ট্রের ব্যাপারে ধর্ম কোনো হস্তক্ষেপ করবে না, আর ধর্মের ব্যাপারে রাষ্ট্র থাকবে নির্লিপ্ত।
অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন বলেই তার পক্ষে রাজনৈতিক অঙ্গনে সকল বাঙালিকে একীভূত করা সম্ভব হয়েছিল। সকল বাঙালিকে সাথে নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান তিনি। তাই তার ৬ দফা হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সকলকে ধর্মীয় বিরোধ উপেক্ষা করে এক হতে সাহায্য করে। এ কারণেই ৭০-এর নির্বাচনে এক অবিশ্বাস্য ফল দেখা যায় এবং সেকারণেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রকৃত পটভূমি রচিত হয়।
তিনি স্পষ্টভাবে জানতেন যে, ধর্মীয় বিরোধের কারণেই সাম্প্রদায়িকতার উদ্ভব হয়। তাই ধর্মীয় বিরোধ রোধকল্পে তিনি সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রীয় মূল চার নীতির অন্তর্ভুক্ত করেন। জীবন দর্শনে অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্ম নিরপেক্ষ হওয়ায় বাংলায় সকল জনগণ তার উপর আস্থা স্থাপন করেছিল এবং দেশ স্বাধীন হয়েছিল। অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এরূপ নেতা বিরল। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি তার জীবনের রাজনৈতিক সফলতার মূল কারণ।
তার আমলে বাংলাদেশে ধর্মীয় কারণে রাজনৈতিক বিরোধ না থাকার কথা, কিন্তু প্রতিহিংসাপরায়ণ ধর্মীয় গোষ্ঠীর রাজনীতিতে উপস্থিতির কারণেই আজও সাম্প্রদায়িকতা স্বাধীন বাংলাদেশে উৎখাত করা সম্ভব হয়নি।
বঙ্গবন্ধুর মতো তার কন্যাও অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্ম নিরপেক্ষতা নিয়ে কাজ করছেন। তাই বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্ম নিরপেক্ষতা একদিন স্থান করে নেবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। একজন প্রকৃত বাঙালি কখনোই সাম্প্রদায়িক হতে পারে না।
করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]
- ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলন নিয়ে বিভক্ত বিএনপি
- বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক
- কুড়িগ্রামের অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট ভুটানের রাজা
- ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ স্মার্ট দেশ হবে: স্পিকার
- নিজেদের নাগরিকদের শিরশ্ছেদ ও পুড়িয়ে মারছে মিয়ানমারের সেনারা
- প্রার্থীর আজ্ঞাবহ কাউকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা করা যাবে না: ইসি
- সেনাবাহিনীতে নতুন সংযোজন তুরস্কের বায়রাক্টার ড্রোন
- একনেকে ৮ হাজার কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
- এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন
- খাগড়াছড়িতে পুলিশ কমান্ডো প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী ও সনদ বিতরণ
- খাগড়াছড়িতে বৈসাবি ও বাংলা নববর্ষ উদযাপনে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত
- শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল পুরোপুরি চালুর অপেক্ষা
- বিমানবন্দরে মুদ্রা কেনাবেচা: ২১ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
- পদ্মা সেতু ঘুরে দেখে মুগ্ধ ভুটানের রাজা
- গ্যাস উত্তোলন: কূপ খননে যুক্ত হচ্ছে তিন বিদেশী কোম্পানি
- পাল্টে যাচ্ছে রাজধানীর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর চেহারা
- শিল্পে দ্রুত ইভিসি মিটার দেবে তিতাস
- ঈদের ছুটির আগেই শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেয়ার নির্দেশ
- কমতির দিকে ডলার সংকট, স্থবিরতা কাটানোর উদ্যোগ থাকবে আসছে বাজেটে
- নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিতে পারবে সরকার
- ভুটানের রাজার সফর: কুড়িগ্রামে নতুন বাণিজ্য সম্ভাবনা
- বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস ৭৫ সালের পর বিকৃত করা হয়েছে
- বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটকে স্বাগত জানিয়েছেন ইতালি প্রবাসীরা
- রেলের টিকিট কিনতে ৮ ঘণ্টায় দেড় কোটি হিট
- বউদের ভারতীয় শাড়ি পোড়ালে বর্জনের কথা বিশ্বাস করবো
- উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন যেভাবে
- জাল টাকা প্রস্তুতকারী চক্রের মূলহোতাসহ আটক ৩
- হুইপ ইকবালুর রহিমের মায়ের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
- যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত
- ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির
- এক শিশুর চিকিৎসায় লাখ টাকা সহায়তা দিল সেনাবাহিনী
- ৮০ ভাগ কাজ শেষ রংপুর-ঢাকা নতুন মহাসড়কের
- খাগড়াছড়িতে বিডি ক্লিনের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান উদ্বোধন
- পানছড়িতে অসহায়দের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ
- ১৭০০ ফুট উঁচুতে নান্দনিক দারুস সালাম জামে মসজিদ
- পাহাড়ে এই বৈষম্যের শেষ কোথায়?
- খা.ছড়িতে আন্তঃ একাডেমি টুর্নামেন্ট বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ
- মাটিরাঙায় ক্লু-লেস হত্যার রহস্য উদঘাটন করল পুলিশ
- জাতীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ: খাগড়াছড়ির টানা দ্বিতীয় জয়
- রামগড়ে সূর্যমুখী চাষে সম্ভাবনার হাতছানি
- রামগড় স্থলবন্দর দিয়ে মার্চে যাত্রী পারাপার শুরু হবে
- জাতীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপে লালমনিরহাটকে হারালো খাগড়াছড়ি
- খাগড়াছড়িতে নদী রক্ষার ব্লক তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ
- খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর ঈদ শুভেচ্ছা উপহার বিতরণ
- দীঘিনালায় কিশোরীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আটক ৩
- সোমবার রাতে ১ মিনিট অন্ধকারে থাকবে সারা দেশ
- কমবে ডিজেল-পেট্রোল-অকটেনের দাম!
- মহালছড়িতে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে জেলেদের মাঝে ছাগল বিতরণ
- রেংমিটচ্য ভাষার প্রাণ ফেরানোর লড়াইয়ে সেনাবাহিনী
- পার্বত্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হলেন জ্বরতী