• শুক্রবার ০২ জুন ২০২৩ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১৯ ১৪৩০

  • || ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৪

দৈনিক খাগড়াছড়ি

মাটিরাঙ্গা বাজার এখন মৌসুমি ফলের দখলে

দৈনিক খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ২১ মে ২০২৩  

মধুমাস জ্যৈষ্ঠের শুরুতেই খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার স্থানীয় বাজারগুলো মৌসুমি ফলে সয়লাব হয়ে গেছে। 

স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত হয়ে যাচ্ছে জেলার বাইরেও। এর মধ্যে বাজারে এসেছে টসটসে রসালো মিষ্টি লিচু, আনারস, কাঁঠাল ও আম। তাছাড়া পুরো মৌসুমজুড়ে রয়েছে কলা। 

মাটিরাঙ্গা বাজারের প্রধান সড়ক এখন মৌসুমি ফলের দখলে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় বাজার থাকে মুখর। তবে এখানে মৌসুমে লিচুর চাহিদাই বেশি। 

বাজার এখন লিচুর দখলে, দেশি লিচুর চেয়ে চায়না টু এবং চায়না থ্রি লিচুর চাহিদা বেশি। ফলন বেশি হওয়ায় প্রতিটি লিচুর আকার ভেদে এবার কম দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি শ দেশি লিচু ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা। চায়না টু বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। তাছাড়া চায়না থ্রি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায়। বাদুড়, পাখি আর বানরের আক্রমণের কারণে লিচু পরিপক্ব হওয়ার আগেই অপরিপক্ব লিচু বিক্রি করছেন বাগান মালিকরা। 

মাটিরাঙ্গা শহরটি ঢাকা-চট্রগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে হওয়ায় প্রতিদিন হাজারো পর্যটক যাতায়াত করার সময় তারা মৌসুমী ফল কিনে থাকেন। এ অঞ্চলের আম, লিচু, কাঁঠাল ফরমালিনমুক্ত হওয়ায় শহরে এসব ফলের কদর খুব বেশি। পর্যটকরা তাদের নিজেদের গাড়ি ভর্তি করে এসব ফল কিনে থাকেন। আবার অনেকে নিজের আত্মীয় স্বজনদের মৌসুমী ফল উপহার দিতেও কিনে নেন এসব ফল। ফলে ব্যস্ত সড়কের পাশেই বিভিন্ন ফলের পসরা সাজিয়ে বসে থাকেন ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাহাড়ে উৎপাদিত প্রচুর মৌসুমি ফল নিজেদের সুবিধামতো পরিবহন করে আনা হচ্ছে মাটিরাঙ্গায়। পৌর এলাকায় কলা বাজার নামে খ্যাত ঐ এলাকায় প্রায় আধা কিলোমিটার জায়গাজুড়ে রয়েছে লিচু, আম, কলা কাঁঠলের হাট। প্রতিদিন উপজেলার তাইন্দং, তবলছড়ি, বড়নাল, আমতলী, বেলছড়ি, ১০ নম্বর, বাইল্যাছড়ি এলাকা থেকে এসব কলা, কাঁঠাল বাজারে নিয়ে আসছেন ক্রেতারা। 

ফল ব্যবসায়ী কাইউম বলেন, ১০ নম্বর এলাকায় প্রায় ১০ একরের একটি মিশ্র ফলের বাগান কিনেছি। এ বছর শুধুমাত্র কাঁঠালের দাম বেশি কিন্তুু লিচু আম বা অন্যান্য ফলের দাম কম। তবে দাম কম হলেও ফলন ভালো হয়েছে তাই বেশ লাভবান হবো আশা করছি।

কাঁঠাল বিক্রেতা আরিফ হোসেন বলেন, তবলছড়ির বিভিন্ন স্থান থেকে আগাম কাঁঠাল বাগান কিনে থাকি। তবলছড়ি থেকে এক পিকআপে  কাঁঠাল নিয়ে এসেছি। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। তাছাড়া দাম ভালো হওয়ায় লাভও বেশি হচ্ছে।

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী জামাল জানান, শহরে পাহাড়ের মৌসুমী সব ফলের বেশ চাহিদা থাকায় শখের বসে অনেকে অগ্রিম অর্ডার দিয়ে রাখেন। মাটিরাঙ্গার আম কাঁঠাল, লিচু বেশ সুস্বাদু এবং বিষমুক্ত। তাই এর চাহিদাও বেশি। 

জানা যায়, মাটিরাঙ্গা উপজেলায় এবার প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের আবাদ করা হয়। প্রতি হেক্টর জমিতে ৩৫ মেট্রিকটন কাঁঠালের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া মাটিরাঙ্গায় ৫৫০ হেক্টর জমিতে আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে হেক্টর প্রতি ফলন ১০ মেট্রিক টন। আমের মোট উৎপাদন ৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। এদিকে ৮০ হেক্টর জমিতে লিচুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়, প্রতি হেক্টরে ফলন ১১ দশমিক ৫ মেট্রিক টন। 

মাটিরাঙ্গা উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন বলেন, পাহাড়ে উপযোগী আবহাওয়া ও মাটির উর্বরাশক্তির পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির চাষাবাদ হওয়ায় বর্তমানে আনারস, কাঁঠাল, আম, লিচুসহ মৌসুমি ফলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। এসব ফল চাষাবাদে প্রশিক্ষণসহ কৃষকদের বিভিন্ন সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]