• শুক্রবার ০২ জুন ২০২৩ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১৯ ১৪৩০

  • || ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৪

দৈনিক খাগড়াছড়ি

কুসুম ফুলের বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু

দৈনিক খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২৩  

মানবদেহের জন্য ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ ছাড়াও দেশি-বিদেশি পাখির খাবার হিসেবে বেশ জনপ্রিয় কুসুম ফুলের বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে ফরিদপুর সদর উপজেলার চর মাধবদিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলে।

দেখতে দারুণ আর পুষ্টিগুণে ভরা কুসুম ফুলের তেল বেশ উপকারী। চরাঞ্চলের বালু মাটির পড়ে থাকা পতিত জমিতে কোনো কিছুই চাষাবাদ হতো না। চাষাবাদের আগ্রহও ছিল না কারও। কিন্তু এসব অনাবাদি জমিতে কুসুম ফুলের চাষ করে সফলতা পাওয়ায় এখন অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন কুসুম ফুল চাষে।

চরাঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে কুসুম ফুলের চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মজিবর মোল্লা ও মইনুল বেপারী। তারা দুইজনে মোট পাঁচ বিঘা জমিতে এই কুসুম ফুলের চাষ করেছেন।

সরেজমিনে চরাঞ্চলের মজিবর মোল্লা ও মইনুল বেপারীর কুসুম ফুলের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, আড়াই থেকে সাড়ে তিন ফুট লম্বা গাছের পাতা ও কান্ডের রং গাঢ় সবুজ। প্রতিটি গাছে ফুটে আছে সাদা, হলুদ, লাল ও খয়েরিসহ ৭টি রঙের পাপড়িযুক্ত ফুল।

ফুলে হলুদ ও লাল বর্ণের অপরূপ রঙ আর মিষ্টি মৌ মৌ গন্ধ শুধু মানুষকেই আকৃষ্টই করে না উপকারী কীটপতঙ্গকেও আকৃষ্ট করে। কুসুম ফুলের কান্ড, পাতা ও কলিতে ছোট ছোট কাঁটা রয়েছে। বাহারি এসব ফুলের পাপড়ি পাখির কচি পাখনার পালকের মত তুলতুলে। এমনই নজরকাড়া অপরূপ ফুলের নাম কুসুম।

এ ফুলের বীজ থেকে উৎপাদিত তেল প্রাকৃতিক ও উন্নত মানের ভোজ্য তেল হিসেবে ব্যবহারে খ্যাতি রয়েছে। এটি একটি তেলবীজ শস্য। গ্রামের ভাষায় ফুলবিচি নামের এর পরিচিত রয়েছে। কৃষি বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় একে বলা হয় কুসুম ফুল। তবে কালের আবর্তনে এখন এ ফুলটি প্রায় বিলুপ্তির পথে।

এ সময় কথা হয় কুসুম ফুল চাষি কৃষক মজিবর মোল্লার সঙ্গে তিনি জানান, এ জমি আগে পড়েই থাকত। কৃষি অফিসের পরামর্শে তিন বিঘা জমিতে কুসুম ফুলের চাষ করেছেন। কুসুম ফুল চাষে তার তেমন কোনো খরচ হয়নি। অন্য ফসলের মতো সার কীটনাশক বা পরিচর্যা করতে হয় না। তেমন কোনো রোগবালাইও নাই। শুধু জমি চাষ দিয়ে বীজ বপন করলেই হয়ে যায়। বপনের চার মাসের মধ্যেই কুসুম ফুল ঘরে উঠে। বাজারে এর চাহিদাও বেশ ভালো।

প্রতি বিঘাতে ৫-৬ মণ কুসুম ফুলের বীজ পাওয়া যায়। বর্তমান বাজারে প্রতিমন কুসুম ফুলের বীজ ৫-৬ হাজার টাকা মণ বিক্রয় হচ্ছে। কুসুম ফুলের বীজ পাখির খাদ্য ও তেল উৎপান হয়ে থাকে।

কুসুম ফুল চাষি মইনুল বেপারী জানান, এ প্রথম তিনি কুসুম ফুলের চাষ করেছেন। জমিতে বীজ বপন করা ছাড়া তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। প্রতি বিঘাতে খরচ হয় প্রায় ৩ হাজার টাকা। তিনি দুই বিঘা জমিতে কুসুম ফুলের চাষ করেছেন। খুব সুন্দর হয়েছে।

লাল, হলুদ, গোলাপি, সোনালি, মেজেন্ডাসহ বাহারি রঙের কুসুম ফুলের সৌন্দর্য দেখতে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে তার জমিতে ভিড় করছেন। এরই মধ্যে নতুন এ ফুল চাষ দেখে অনেক কৃষকই কুসুম ফুল চাষে আগ্রহ প্রকাশ করে তার কাছে বীজ চেয়েছেন। ফুলের বীজ থেকে তেলের পাশাপাশি কুসুম ফুলের বীজ পাখিদের জন্য জনপ্রিয় একটি খাদ্য। এতে যারা পাখির ব্যবসা করেন তারা বীজ কিনতে আগ্রহী।

তিনি আরও জানান, এবার লাভ হলে আগামীতে আরো বেশি জমিতে কুসুম ফুলের চাষ করবেন তিনি।

এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জিয়াউল হক জানান, এবার ফরিদপুর সদরে ১১০ হেক্টর জমিতে কুসুম ফুলের চাষ করা হয়েছে, আবহাওয়া ও মাটি উপযোগী হওয়ায় ভালো ফলন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের। এছাড়া যেকোনো সংবাদ বা অভিযোগ লিখে পাঠান এই ইমেইলেঃ [email protected]