খাগড়াছড়িতেও থাকবে না কোন গৃহহীন, ২ ধাপে ঘর পেল ২২৩১ পরিবার

মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসাবে আরও ৫৩ হাজার ৩৪০টি পরিবার নতুন ঘর পেয়েছেন। সারা দেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন অসহায় মানুষদের গত রবিবার (২০ জুন) এসব ঘর দেওয়া হবে। এ নিয়ে মাঠ প্রশাসন আগে থেকেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বৃহস্পতি ও শুক্রবার ঘর হস্তান্তর সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানায়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে এসব ঘর দেওয়া হয়েছে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রবিবার বিনা মূল্যে দুই শতক জমিসহ সেমিপাকা এসব ঘর পরিবারগুলোর কাছে তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ‘মুজিববর্ষে কেউ গৃহ ও ভূমিহীন থাকবে না’- প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা বাস্তবায়নে প্রথম পর্যায়ে ঘর পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯০৪টি পরিবার।

এদিকে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান (২য় পর্যায়) কার্যক্রমে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতেও বিনামূল্যে জমি ও ঘর বুঝে পেয়েছেন ১ হাজার ৯৬৩টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবার। এর মধ্যে জেলার মহালছড়িতে ২২১টি, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় ১৭৫টি, দীঘিনালায় ২৯১টি, পানছড়িতে ৩০৭টি, রামগড়ে ৯১টি, গুইমারায় ১০৯টি, মাটিরাঙায় ১৯৩টি, মানিকছড়িতে ২৭৩টি এবং লক্ষ্মীছড়িতে ৪১২টি পরিবারের মাঝে নতুন ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।

মহালছড়ি: 
খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে মুজিববর্ষ উপলক্ষে গতকাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  জোবাইদা আক্তারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহালছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কান্তি চাকমা।

আরও উপস্থিত ছিলেন মহালছড়ি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) তাহমিনা আফরোজ ভুঁইয়া, মহালছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, সদর ইউপি  চেয়ারম্যান রতন কুমার শীল, মুবাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বাপ্পী খীসা, মাইসছড়ি ইউপি  চেয়ারম্যান সাজাই মারমা, ক্যায়াংঘাট ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চাকমা।

গণভবন থেকে ভার্চুয়ালী এসব ঘর বিতরন কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জোবাইদা আক্তার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বতোভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

এসময় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মোট ২২১টি পরিবারের হাতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের চাবি ও জমির দলির হস্তান্তর করা হয়। 

খাগড়াছড়ি সদর:
গতকাল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুজিব বর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন শেষে খাগড়াছড়ি জেলার সদর উপজেলায় ২য় পর্যায়ে ১৭৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘরের কাগজপত্রের ফাইল হস্থান্তর করা হয়।

উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা মাহফুজা মতিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শানে আলম, পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরীসহ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানগণ এবং অন্যান্য অফিস প্রধান কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন এলাকা হতে আগত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন মুঝিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজ মতিন বলেন, স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে মানুষের মৌলিক চাহিদা ও কর্মসংস্থানের বিষয়কে অগ্রধিকার দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর দীর্ঘদিনের দুঃখ-কষ্ট লাঘব হবে।

দীঘিনালা:
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম এর ২য় পর্যায়ে দীঘিনালায় ১শত ৩৭ পরিবারের মাঝে ঘরসহ জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে ৫৩ হাজার ৩শত ৪০ টি পরিবারকে জমিসহ গৃহ প্রদান কর্মসূচি উদ্বোধন ঘোষণা করার পর দীঘিনালা উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে ১৩৭টি পরিবারেরে মাঝে ঘরসহ জমির দলিল তুলে দেন শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, এমপি।

এসময় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত উদ্ধোধনী সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্ল্যাহর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাশেম, দীঘিনালা প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম রাজু এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান প্রমুখ।

জানা যায়, ২ কোটি ৩৪ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা ব্যয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৩৭টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এর আগে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম এর প্রথম পর্যায়ে দীঘিনালায় ৩০টি গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান করা হয়।

পানছড়ি:
খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বর্ষের উপহার হিসেবে বিনামূল্যে শান্তির আবাস প্রদানের দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম উদ্বোধন করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রবিবার পানছড়ি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ভিডিও কনফারেন্সে উপকারভোগীদের মাঝে আবাস প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান চন্দ্র দেব চাকমা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মো: আব্দুল মোমিন, সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার দেব, ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাজির হোসেন, কিরণ ত্রিপুরা, কালাচাঁদ চাকমা প্রমুখ।

এ সময় স্থায়ী শান্তির নিবাস পাওয়া উপকারভোগীরা মেতে উঠে উচ্ছ্বাস আর উল্লাসে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার দেব জানান, পানছড়িতে নির্মিত ঘরগুলোর মান সন্তোষজনক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি পানছড়িবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

রামগড়:
জেলার রামগড় উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এর দ্বিতীয় পর্যায়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন ৯১টি পরিবারের মাঝে আনুষ্ঠানিক ভাবে  জমির দলিল ও ঘরে চাবি হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে গত ২৩ জানুয়ারী ২২টি ঘরের উদ্বোধনের মাধ্যমে প্রকল্পটি শুরু হয়। রামগড় উপজেলায় এ পর্যন্ত প্রকল্পটির আওতায় ১৯৩টি ঘরের চাবি ও জমির দলিল উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে।

রবিবার সকাল ১১ টায় রামগড় উপজেলা টাউন হলে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কন্ফারেন্সের মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ন-২ প্রকল্প এর উপকারভোগীদের মাঝে নব নির্মিত ঘরের চাবী ও দলিল হস্তান্তরের মাধ্যমে একযোগে প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ও  জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অফিসার ইনচার্জ  মো. সামসুজ্জামান, উপজেলা আ.লীগ সভাপতি মোস্তফা হোসেন, রামগড় ১নং ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম মজুমদার, পাতাছড়া ২নং ইউপি চেয়ারম্যান মনিন্দ্র ত্রিপুরা, উপজেলা আ. লীগ সাধারন সম্পাদক নুরুল আলম আলমগীর, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মফিজুর রহমানসহ প্রমুখ।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার উম্যাচিং চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, প্রকল্পের সদস্য সচিব ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: মনসুর আলী। এসময়  সরকারী পদস্থ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গুইমারা:
গুইমারা উপজেলায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভুমিহীন ও গৃহহীন পবিবারের জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম ২য় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ও জমির দলির বুঝে পেয়েছেন ১০৯টি পরিবার। 

গুইমারা উপজেলা পরিষদ হল রুমে ভিডিও কনফারেন্স মাধ্যমে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভুমিহীন ও -গৃহহীন পরিবার, জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম ২য় পর্যায় এর শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

গুইমারায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার আহমেদ গুইমারা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ সদস্য মেমং মারমা, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান উশ্যপ্রু মারমা। এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারি, এবং আওয়ামীলীগের অঙ্গ ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গুইমারা উপজেলার ১০৯ জন ভুমিহীন -গৃহহীন পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি ও জমির দলিল হস্তান্তর করেন অতিথিরা।

মাটিরাঙা:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা ঘর পেল ১০৯ গৃহহীন পরিবারG রোববার বেলা সাড়ে ১১ টারর দিকে সারা দেশের ন্যায় খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ভিডিও কন্ফারেন্সের মাধ্যমে উপকারভোগীদের মাঝে নবনির্মিত ঘর প্রদানের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । এর পরপরই ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান কার্যক্রমের (দ্বিতীয় পর্যায়) আওতায় মাটিরাঙ্গার ১০৯ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘরের চাবি ও বন্দোবস্তকৃত জমির দলিল হস্তান্তর করেন খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অ.দা) ফারজানা আক্তার ববি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম ও মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আলী। অনুষ্ঠানে বড়নাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আকবর ও উপকারভোগী মৃদুল চক্রবর্তী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক উদ্যোগের ফলেই সারাদেশের ন্যায় মাটিরাঙ্গায় গৃহহীন ও ভুমিহীন পরিবারগুলো মাথা গোজার ঠাই পেল।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এমমন ঘোষনার সুফল পাবে মাটিরাঙ্গার গৃহহীন মানুষ।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজ কুমার শীল, সহকারী পোগ্রামার রাজীব রায় চৌধুরী, সমাজ সেবা কর্মকর্তা বাদশাহ ফয়সাল, গোমতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন লিটন ও আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গনি ছাড়াও সরকারী পদস্থ কর্মকর্তা, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মানিকছড়ি: 
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিবর্ষে সারা দেশে ভূমি ও গৃহহীন পরিবারে ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার’ আশ্রয়ণ প্রকল্প-২এর আওতায় ২য় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩শ ৪০ পরিবারের হাতে ঘরের চাবি ও দলিল হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই কার্যক্রমে মানিকছড়ির আরো ২৭৩ পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি ও দলিলপত্র হস্তান্তর করেছেন উপজেলা প্রশাসন। এ নিয়ে ১ম ও ২য় পর্যায়ে উপজেলার মোট ৬শ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন নান্দনিক ডিজাইনের ঘরে।

সুবিধাভোগী ৬শ পরিবারের মধ্যে ১ম পর্যায়ে ৫৫টি এবং ২০ জুন ২৭৩টি ‘ভূমিহীন ও গৃহহীন(‘ক’ শ্রেণির পরিবার পূর্নবাসনে নির্মিত) পরিবারকে নতুন ঘরের চাবি ও দলিলপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। অবশিষ্ট ২৭২টি গৃহ আগামী এক মাসের মধ্যে সুবিধাভোগীর মাঝে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে।

২০ জুন সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলা টাউন হলে ২য় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সারা দেশে ৫৩ হাজার ৩শ ৪০টি ভূমিহীন ওগৃহহীন পরিবারের কাছে ঘরের চাবি ও দলিলপত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে সরাসরি উদ্বোধন কার্যক্রমে অংশগ্রহন করে তা উদ্বোধন করেন। টাউন হলে অনুষ্টিত ঘরের চাবি ও দলিল হস্তান্তর অনুষ্টানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না মাহমুদ। ১ নং ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুর রহমান সঞ্চালিত অনুষ্টানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ কামাল উদ্দীন।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(জেনারেল) মোঃ হাবিবুল্লাহ, প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ জয়নাল আবেদীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এম.এ. রাজ্জাক, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম বাবুল,ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শাহনূর আলম, ২নং বাটনাতলী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল ইসলাম মোহন, উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোঃ আবদুল খালেক, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সুচয়ন চৌধুরীসহ সকল কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি,সুবিধাভোগী,সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

লক্ষ্মীছড়ি:
মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান(২য় পর্যায়) সারা দেশে ভিডিও কন্ফারেন্স’র মাধ্যমে ৫৩ হাজারেরও বেশি ঘর উদ্বোধন করবেন।

জেলার ৯ টি উপজেলার জন্য ৩হাজার ৫৮৯ টি পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ কাজ চলছে। ২০জুন রোববার ১ হাজার ৯শ ৬৩ পরিবারকে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় ৪০০ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হয়।

লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইয়াছিনসহ জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় মোট ৭০০টি ঘরের মধ্যে বাকি ৩০০টি ঘর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ি জেলার ৯টি উপজেলার জন্য ৩হাজার ৫৮৯টি পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ১ম পর্যায়ে ২৬৮টি ঘর হস্থান্তর করা হয়েছে। ২য় ধাপে ২০জুন ১হাজার ৯৬৩টি পরিবারকে চাবি হস্থান্তর করা হয়েছে। অবশিষ্ট ১৩৯৮টি ঘর নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।